রাজশাহীতে সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ
রাজশাহীতে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক শ’ রাউন্ড রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। রবিবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে নগরীর সোনাদিঘী মোড়ে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। পরে তা আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে।
বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার নূর হোসেন জানান, হরতালের সমর্থনে সাহেববাজার ভুবন মোহন পার্কে বিক্ষোভ সমাবেশ করে বিএনপি। সমাবেশে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব মিজানুর রহমান মিনু, সিটি মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন উপস্থিত ছিলেন।
তিনি জানান, সমাবেশ শেষে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পরে মিজানুর রহমান মিনু সমাবেশ করে কর্মসূচি শেষ করার ঘোষণা দেন। সমাবেশ শেষে ফেরার পথে রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি মাহফুজুর রহমান রিটনের নেতৃত্বে ছাত্রদল সোনাদিঘী মোড়ে হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এ সময় বিপরীত দিক থেকে মহিলা আওয়ামী লীগের একটি মিছিল আসে। মিছিলে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার ও সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের স্ত্রী শাহিন আখতার রেনী উপস্থিত ছিলেন। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মহিলা লীগের মিছিলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে তারাও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় উত্তেজনা দেখা দিলে দু’পক্ষের সংঘর্ষ এড়াতে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে পেট্রোল বোমা, ককটেল ও ইটপাটকেল ছোড়ে। মুহূর্তেই সোনাদিঘী মোড়, রাজশাহী কলেজ ও সিটি কলেজ এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
ওসি খন্দকার নূর হোসেন জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েক শ’ রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়। সন্ধ্যায় নগরীর কাদিরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের সামনে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এ সময় তারা টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধের চেষ্টা করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই হরতাল সমর্থকরা পালিয়ে যায়।
এদিকে সন্ধ্যার পর কোর্ট স্টেশন এলাকায় শিবির ঝটিকা মিছিল বের করে। মিছিল থেকে একজনকে আটক করা হয়।
রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন জানান, পুলিশ বিনা উস্কানিতে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে। পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেটে ছাত্রদলের ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র সহকারী পুলিশ কমিশনার ইফতেখায়ের আলম জানান, মিছিল করার বিষয়ে ছাত্রদল পুলিশের কাছে কোনো অনুমতি নেয়নি। মিছিলটি নিয়ে ছাত্রদলের কর্মীরা সোনাদীঘি মোড়ে এসে দুটি অটোরিকশা ভাঙচুর করে। পুলিশ তাতে বাধা দিতে গেলে মিছিলকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পাল্টা জবাবে পুলিশও রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। পরে মিছিলকারীরা পালিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থল থেকে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে বিভিন্ন স্থানে পুলিশের অভিযান চলছে।