২০ দলের সকাল-সন্ধ্যা হরতাল সোমবার সারা দেশে গণগ্রেফতার, বিক্ষোভ ও গাড়ি ভাঙচুর
জনসভা করতে না দেওয়া, সকল রাজবন্দিদের নিঃশর্ত মুক্তিসহ কয়েকটি দাবিতে সোমবার সারা দেশে ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হরতাল আহ্বান করেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট।
হরতালকে কেন্দ্র করে দুদিন আগেই সারা দেশে গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বাসা-বাড়িতে তল্লাশি ছাড়াও গণগ্রেফতার শুরু করেছে পুলিশ। রবিবার হরতালের সমর্থনে দেশের সাত মহানগরসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি, জামায়াত ও জোটের শরিক দলগুলোর নেতাকর্মীরা। এ সময় বিভিন্ন স্থানে গাড়ি ভাঙচুর, আগুন, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
এ দিকে, জননিরাপত্তা দিতে পুলিশের পাশাপাশি রাজধানীতে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। তাৎক্ষণিক সাজা দিতে বসানো হয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল সফল করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এ দিকে, হরতালকে সামনে রেখে দেশব্যাপী পুলিশ গণগ্রেফতার শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহল কবির রিজভী আহমেদ। তিনি দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘রবিবার বিকেলে পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পুলিশ দেড় শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করেছে।’
অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল রাজনৈতিকভাবে হরতাল মোকাবেলা করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম রবিবার এ ঘোষণা দেন।
অপরদিকে, বিএনপির সকল নেতাকেই গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন মন্ত্রী ও সরকার দলীয় নেতা কামরুল ইসলাম। সরকারপন্থি ব্যবসায়ী নেতারা বলেছেন, হরতালের নামে নৈরাজ্য করলে তা প্রতিহত করা হবে।
বিএনপি দলীয় সূত্র জানিয়েছে, এবার হরতালে দলের দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতাদের কর্মকাণ্ড দেখার জন্য বিশেষ টিম গঠন করেছেন দলীয় প্রধান খালেদা জিয়া। দিনের বিভিন্ন সময় হরতাল পরিস্থিতি ও নেতাদের ভূমিকা সম্পর্কে অবগত করার জন্য তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শরিক দলের শীর্ষ নেতারাও নিজ নিজ দলের নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
২৭ ডিসেম্বর গাজীপুরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সমাবেশ করতে না দেওয়া, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র্র রায়কে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেওয়া, কারাবন্দি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ভাইস-চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও সকল রাজবন্দির মুক্তির দাবিতে এ হরতাল আহ্বান করা হয়। গত শনিবার জোটের মহাসচিবদের বৈঠক শেষে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
হরতালের আওতামুক্ত : অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী গাড়ি, ওষুধ ও খাবারের দোকান, সংবাদপত্র ও মিডিয়ার যানবাহন প্রভৃতি এই সকাল-সন্ধ্যা হরতালের আওতার বাইরে থাকবে। এ ছাড়া চট্টগ্রামের লাল দিঘির মাঠ এলাকায় গাউসুল আজম সম্মেলন হরতালের আওতামুক্ত থাকবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির দফতরের দায়িত্বে নিয়োজিত যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ।