বিচ্ছিন্ন ঘটনায় ২০ দলের হরতাল চলছে, নিহত ১
আটক, ধাওয়া পাল্টাধাওয়া, সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ, পুলিশের গুলিসহ বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে রাজধানীসহ সারাদেশে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের সোমবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছে। এ পর্যন্ত একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।
গাজীপুরে পূর্ব নির্ধারিত জনসভায় ১৪৪ ধারা জারির প্রতিবাদ এবং ২০ দলের শীর্ষ নেতাদের মুক্তির দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট সোমবার সারাদেশে হরতাল আহ্বান করে। সকাল ৬টায় শুরু হওয়া এ হরতাল চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।
নোয়াখালীতে পিকেটারের ইটের আঘাতে রাজধানীর আগারগাঁও তাওহিদ ল্যাবরেটরি স্কুলের শিক্ষিকা শামসুন্নাহার নিহত হয়েছেন।
জেলা শহরের মাইজদি-বেগমগঞ্জ সড়কে রবিবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
হরতালের সমর্থনে রাজধানীর বেশ কিছু জায়গায় মিছিল করেছে বিএনপি ও জামায়াত-শিবির।
রাজধানীর পল্লবী সুপার মার্কেটের সামনে হরতাল সমর্থনে ভাঙচুরের সময় পুলিশের গুলিতে মো. স্বপন (৩৫) নামে এক পিকেটার আহত হয়েছেন। এ সময় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় এ ঘটনা ঘটে।
পল্লবীর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউজ্জামান জানান, সকাল সাড়ে ৮টায় হরতাল সমর্থনকারীরা একটি মিছিল বের করে। এসময় তারা ৬-৭টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাঙচুর করে।
তিনি জানান, তখন বাধা দিলে পুলিশকে লক্ষ্য করে পিকেটাররা ইট-পাটকেল ছুড়লে পুলিশ তাদের গুলি করতে বাধ্য হয়। ওই সময় স্বপন আহত হন। এছাড়া পিকেটারদের হামলায় উপপরিদর্শক (এসআই) বারী ও দুই কনস্টেবল আহত হয়েছেন।
বর্তমানে স্বপন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।
সকাল পৌনে ৮টার দিকে মালিবাগ চৌধুরীপাড়ায় জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালায় এবং দুই জমায়াত কর্মীকে গ্রেফতার করে। আহত হয় ১৫জন। হরতালের সমর্থনে রাজধানীর চাঁনখারপুলে মিছিল করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের গেইটে অবস্থান নিয়েছেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। তার সঙ্গে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কয়েকজন নেতাও রয়েছেন।
সকালে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সরকারের দমন-পীড়নের মুখেও নেতাকর্মীরা রাস্তায় নেমে আসছে। জনগণ যার যার অবস্থান থেকে ২০ দলীয় জোটের এ কর্মসূচিকে সমর্থন দিচ্ছে। নিশ্চয়ই অন্যদিনের চেয়ে হরতাল আজ কড়াভাবে পালিত হবে।’
হরতাল কেমন হচ্ছে? জানতে চাইলে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা নিজেরাই দেখতে পাচ্ছেন রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা তেমন নেই। দোকানপাট, অফিস-আদালতে মানুষের যাতায়াতও তেমন নেই। এ থেকেই আপনারা বুঝতে পাচ্ছেন এ দেশের মানুষ কী পরিমাণে ২০ দলীয় জোটকে সমর্থন করছে।’
তিনি বলেন, ‘এ হরতাল হচ্ছে জনগণের পক্ষে। হরতাল সফল হচ্ছে ও হবে।’
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীদের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এ দিকে হরতালের সমর্থনে আগের দিন রবিবার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় মিছিল করে বিএনপি-জামায়াত। হরতালকে কেন্দ্র করে রাজধানীর কয়েক জায়গায় গাড়ি ভাঙচুর, আগুন ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে রাজনৈতিকভাবে হরতাল মোকাবিলা করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল। রবিবার আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক প্রেস বিফ্রিংয়ে এ ঘোষণা দেন ১৪ দল সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিম।