রাজশাহীতে নিরুত্তাপ হরতাল
রাজশাহীতে শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হচ্ছে ২০ দলীয় জোটের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল। নগরীর কোথাও সোমবার সকাল থেকে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। নগরীর কয়েকটি এলাকায় ঝটিকা মিছিল করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
এদিকে রবিবার রাতে র্যাব ও পুলিশ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পেট্রোলবোমা ও ওয়ান শুটারগান উদ্ধারসহ ৩৬ জনকে আটক করেছে।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র সহকারী কমিশনার ইফতে খায়ের আলম জানান, সকাল সোয়া ৭টার দিকে নগরীর উপশহর এলাকায় মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলনের নেতৃত্বে কতিপয় নেতাকর্মী হরতালের সমর্থনে ঝটিকা মিছিলের চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তারা পালিয়ে যান। এ ছাড়াও সকাল সোয়া ৭টার দিকে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব মিজানুর রহমান মিনু, সিটি মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন কয়েকজন নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে মালোপাড়ার দলীয় কার্যালয় কাবিল ম্যানসনের সামনে উপস্থিত হন। সেখান থেকে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মিজানুর রহমান মিনু দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। তবে তারা হরতালের পক্ষে কোনো স্লোগান দেননি। সকাল সোয়া ৮টার দিকে নগরীর কোর্ট এলাকায় হরতালের সমর্থনে ঝটিকা মিছিল ও পিকেটিংয়ের চেষ্টা করেন জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাদের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। সকাল ১০টার দিকে নগরীর শালবাগান এলাকা দিয়ে পুলিশের একটি পিকআপভ্যানে টহল দেওয়ার সময় হরতাল সমর্থকরা তাতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ সময় পুলিশ ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যান।
সহকারী কমিশনার ইফতে খায়ের আলম আরও জানান, রবিবার রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ২০ দলীয় জোটের ৩৪ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে।
র্যাব-৫ রাজশাহীর সিনিয়র এএসপি মির্জা গোলাম সারোয়ার জানান, রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব সদস্যরা নগরীর মতিহার থানার সাতবাড়িয়া এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় ৭টি পেট্রোলবোমা উদ্ধারসহ সিরাজুল ইসলাম (২৩) ও আব্দুল নাঈমকে (১৮) আটক করা হয়। একই সময় অপর একটি দল নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার মেহেরচণ্ডী এলাকায় অভিযান চালিয়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি ওয়ান শুটারগান ও কয়েকটি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে।
এ ছাড়া হরতালে নাশকতা এড়াতে নগরীতে পর্যাপ্তসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি র্যাবও টহল দিচ্ছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে দুই প্লাটুন বিজিবিও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। হরতালের কারণে বন্ধ রয়েছে দূরপাল্লা ও আন্তঃজেলা রুটে বাস-ট্রাক চলাচল। তবে ট্রেন যোগাযোগ স্বাভাবিক রয়েছে।