‘তারেককে তৃতীয় শ্রেণীর কয়েদী হিসেবে জেলে ঢুকতে হবে’
ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (এনডিএফ) চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নিলু বলেছেন, ‘তারেক রহমান ভয়ে দেশে আসেন না। কারণ দেশে এলে তাকে তৃতীয় শ্রেণীর কয়েদী হিসেবে জেলে ঢুকতে হবে।’
রাজধানীর গুলিস্তানের গোলাপ শাহ মাজারের সামনে সোমবার এনডিএফ আয়োজিত জনসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
শেখ শওকত হোসেন নিলু তারেক রহমানের সমালোচনা করে বলেন, ‘আপনি কার পরামর্শে অপরিপক্ব বক্তব্য দিচ্ছেন। আপনি বলছেন এ সরকার অবৈধ, নির্বাচন অবৈধ। কিন্তু সরকার বা নির্বাচন অবৈধ হতে পারে না। বলা যেতে পারে, সরকার ও নির্বাচন অনৈতিক।’
তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান বঙ্গবন্ধুকে রাজাকার বলেছেন। বঙ্গবন্ধু জাতীয় নেতা। তার সমালোচনা মওলানা ভাসানী, আতাউর রহমান খান বা ফজলুল কাদের চৌধুরীই করতে পারেন। কিন্তু আপনি করতে পারেন না। কারণ ওই সময় আপনার জন্মই হয়নি। মনে রাখবেন, বিতর্কিত লোক বেশিদূর এগোতে পারে না। সুতরাং আপনি সংযত হন।’
তারেক রহমানকে উদ্দেশ করে নিলু আরও বলেন, ‘আপনি দেশে আসেন না ভয়ে। আপনার মা তো আপনাকে এমপিও বানাননি, মন্ত্রীও বানাননি। দেশে এলে তো আপনাকে তৃতীয় শ্রেণীর একজন কয়েদী হিসেবে জেলে ঢুকতে হবে।’
২০ দল থেকে বহিষ্কৃত এই নেতা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ারও কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ‘ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির সঙ্গে খালেদা জিয়াকে দেখা করতে বলেছিলাম। কিন্তু তিনি দেখা করলেন না। আমি তাকে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নিতে বলেছিলাম। তিনি তাও করেননি। প্রধানমন্ত্রীর ইফতার পার্টিতে অংশ নেওয়ার কারণে তিনি আমাকে জোট থেকে বের করে দিলেন। আমাকে হেলিকপ্টার থেকে ফেলে দিলেন। কিন্তু নিলু জঙ্গলে পড়ল নাকি জমিনে পড়ল, তা কিন্তু জানেন না।’
খালেদা জিয়ার উদ্দেশে নিলু বলেন, ‘আপনাকে প্রধানমন্ত্রী থেকে বিরোধীদলীয় নেতা, বিরোধীদলীয় নেতা থেকে আমজনতার কাতারে কারা নিয়ে এলো? তারা আপনার চারপাশেই আছে। তারা আপনার দলও ধ্বংস করবে।’
মির্জা ফখরুলকে ষড়যন্ত্রকারী, অযোগ্য, অথর্ব অভিহিত করে তিনি বলেন, বিএনপিকে রক্ষা করতে হলে তাকে বাদ দিয়ে নজরুল ইসলাম খান, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও আব্দুল্লাহ আল নোমানের মধ্য থেকে কাউকে মহাসচিব করুন। কর্নেল অলি ও বি চৌধুরী সম্পর্কে সাবধান থাকতেও খালেদাকে আহ্বান জানান নিলু।
৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করা ভুল ছিল উল্লেখ করে নিলু বলেন, ১৯৭৪ সালের এক ভুলে জাসদ যেমন খান খান হয়ে গেছে, আগামী নির্বাচনে অংশ না নিলে বিএনপিও খান খান হয়ে যাবে। কোনোভাবেই শেষরক্ষা হবে না।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে নিলু বলেন, ‘আপনিও জানেন ৫ জানুয়ারির নির্বাচন গ্রহণযোগ্য নয়। সব জনগণ ভোট দিতে পারেনি। আপনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা। আপনার হারানোর কিছু নেই। যা হারানোর তা তো পঁচাত্তরেই হারিয়েছেন। আপনি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। আপনার চাওয়া-পাওয়ারও তো কিছু থাকতে পারে না। তাহলে কেন ভোটারবিহীন নির্বাচনের কলঙ্কের তিলক বয়ে বেড়াবেন। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে মধ্যবর্তী নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।’
এনডিএফের শরিক বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান সেকেন্দার আলী মনিরের সভাপতিত্বে জনসভায় বক্তব্য রাখেন— এনডিএফের মহাসচিব ও এনডিপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আলমগীর মজুমদার, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের চেয়ারম্যান জোবায়দা কাদের চৌধুরী, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান শেখ আনোয়ারুল হক, ইসলামিক পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এম এ রশিদ প্রধান, স্বাধীনতা পার্টির চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিস, তৃণমূল ন্যাপের চেয়ারম্যান পারভিন নাসের খান ভাসানী, ইনসাফ পার্টির চেয়ারম্যান শহীদ চৌধুরী, ভাসানী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান মমতাজ চৌধুরী, এনপিপির মহাসচিব আব্দুল হাই মণ্ডল প্রমুখ।