সুন্দরবনের ট্যাঙ্কারডুবি : জাতিসংঘের পর্যবেক্ষণ; নৌ-চলাচল বন্ধ করা উচিত

Sundarban_UN1পরিবেশগত ঝুঁকি বিবেচনা করে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে নৌ-চলাচল বন্ধ করার সুপারিশ করেছে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল।
সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে ৯ ডিসেম্বর তেলের ট্যাঙ্কারডুবির ঘটনায় ৬ দিন অনুসন্ধান করে প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে সরকারের প্রতি এই সুপারিশ প্রদান করে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল। বুধবার বিকেলে রাজধানীর কাওরানবাজারে হোটেল সোনারগাঁওয়ে সংবাদ সম্মেলন করে প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
২২ থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ দিন ২৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল সুন্দরবনে পর্যবেক্ষণ করে। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞ এ্যামিলিয়া ওয়ালসন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জাতিসংঘ প্রতিনিধি দলের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, তেলের ট্যাঙ্কারডুবির ঘটনায় তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়েছে সীমিত আকারে। স্থানীয় জনগণ ও বনবিভাগের তৎপরতার কারণে এর প্রভাব তাৎক্ষণিকভাবে তেমন পড়েনি। শ্যালা নদীর ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত তেল ছড়িয়ে আছে এই বিষয়টি প্রতিনিধি দলের চোখে পড়েছে। তবে বন্যপ্রাণীর ওপর এর প্রভাব খুব কমই লক্ষ্য করা গেছে।
মরা কটাল থাকার কারণে সুন্দরবনের ভেতরে তেল প্রবেশ করেনি বলে ক্ষতি কম হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে দীর্ঘমেয়াদে সুন্দরবনে কী ধরনের প্রভাব পড়বে তা নির্ধারণের জন্য, স্বল্পমেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন বলে প্রতিনিধি দল মনে করে।
বাংলাদেশ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় অনেক দক্ষ বলেও জাতিসংঘ প্রতিনিধি দল মনে করে। তবে তাদের দাবি, তেল দূষণ ব্যতিক্রম ধরনের দুর্যোগ দাবি করে তারা বলছে, এই ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলায় বিশেষ ধরনের ব্যবস্থা থাকা উচিত। টেকনিক্যাল ব্যবস্থা নিশ্চিত করা গেলে এই ধরনের দুর্যোগে ক্ষয়-ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিনিধি দলের প্রধান এ্যামিলিয়া ওয়ালসন বলেন, ‘সুন্দরবনের পরিবেশ ভিন্ন বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে কম প্রভাব লক্ষ্য করা গেলেও দীর্ঘমেয়াদে সুন্দরবনের উপর কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে তার জন্য স্বল্পমেয়াদে এবং দীর্ঘমেয়াদে পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘স্থানীয় জনগণ ২০ শতাংশ তেল অপসারণ করতে পেরেছে বলেই তাৎক্ষণিক প্রভাব সীমিত আকারে হয়েছে।’
এ সময় তিনি এই দুর্ঘটনাকে বাংলাদেশের জন্য একটি সতর্কবার্তা বলেও উল্লেখ করেন এ্যামিলিয়া।
সংবাদ সম্মেলনে বন ও পরিবেশ মস্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যতটুকু জানা গেছে সুন্দরবনে ক্ষতি কম হয়েছে।’
সুন্দরবন দিয়ে নৌ-চলাচল বন্ধ করা হবে কিনা এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি সরাসরি কোনো উত্তর দেননি। তিনি বলেন, ‘সরকার বিকল্প নৌ-রুটের বিষয়ে চিন্তা করছে।’
জাতিসংঘের সতর্কবার্তার কারণে সরকার রামপালে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প থেকে সরে আসবে কিনা জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘রামপালে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নতুন এবং উন্নত প্রযুক্তিতে করা হবে। আরও একটি বিষয় হলো বর্তমানে বিশ্বের প্রতিটি দেশই পরিবেশের বিষয়ে সতর্ক। বাংলাদেশ সরকারও এমন কোনো প্রকল্প গ্রহণ করবে না, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতি হবে।’

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend