গরুর জন্য আমদানি করা চাল খাচ্ছেন মানুষ!
গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে ভারত থেকে আমদানি করা চাল অবৈধভাবে বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। যার মূল্য কম হওয়ায় গ্রামাঞ্চলের নিম্নশ্রেণীর মানুষ খাওয়ার জন্য কিনছেন। এমনই অভিযোগ তোলা হয়েছে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে।
বৃহস্পতিবার দশম জাতীয় সংসদের কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি’র ৬ষ্ঠ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে কমিটির সভাপতি মো: মকবুল হোসেন।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, কমিটির বৈঠকে সভাপতি কমিটির সদস্যদের কাছে জানতে চান, ভারত থেকে গো খাদ্য হিসেবে যে চাল আমদানি হয় সেগুলো স্বল্প দামে মানুষকে খাওয়ানোর জন্য বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এমন অভিযোগের বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের গোচরীভূত কিনা। এ বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী কমিটিকে জানান, বিভিন্ন সীমান্ত পথে ভারত থেকে নিম্নমানের হলুদ রঙের চাল আসছে যা খাদ্য ও পোল্ট্রি ফিড হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।
গবাদি পশুর জন্য আমদানি করা চাল মানুষের খাওয়া ক্ষতিকর কী না এমন প্রশ্নে কেন্দ্রীয় পশু হাসপাতালের চিকিৎসক ড. মো. লুৎফর রহমান বলেন, এই চাল দীর্ঘ সময় গোডাউনে পড়ে থাকে। এর কারণে চালে ছত্রাকের সংক্রমিত হতে পারে। যা খেলে মানুষের শরীরে বিষক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে।
এ বিষয়ে কমিটির সদস্য মো. নুরুল ইসলাম ওমর বলেন, গত মিটিংয়েও এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। মাননীয় সভাপতি পাবনা জেলায় গো-খাদ্য হিসেবে আমদানি করা খাদ্য মানুষকে খাওয়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। তাই কমিটির সদস্যরা আমদানি হওয়া গো-খাদ্য কখনই যাতে মানুষের খাদ্য হিসেবে বিক্রি করা না হয় সেদিকে জোর দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়কেও এলার্ট করেছে কমিটি। মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে।
জানতে চাইলে সভাপতি মো: মকবুল হোসেন বলেন, ‘গো-খাদ্য বা মুরগির খাদ্য হিসেবে যা আমদানি হয় তা পশুদেরই খাওয়ানো হচ্ছে। মানুষের খাওয়ার জন্য বিক্রয় হচ্ছে এমন অভিযোগের বিষয়ে মন্ত্রণালয় পক্ষ থেকে যাচাই করে দেখা গেছে এটি আসলে সঠিক নয়।’
কী অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি সংসদীয় কমিটিতে এই বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পাবনার ঈশ্বর্দীতে গো-খাদ্য মানুষকে খাওয়ানোর অভিযোগটি এসেছিল।’
সূত্রমতে, দেশের বিভিন্ন স্থানে গো-খাদ্য হিসেবে আমদানীকৃত চাল কম দাম হওয়াতে তা গ্রামাঞ্চলে মানুষের খাদ্য হিসেবে এই চাল বিক্রি করে দেয়া হয়। তবে কমিটির বৈঠকে উপস্থিত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তা উড়িয়ে দিলেও বিষয়টির বিস্তারিত সরেজমিনে তদন্ত না করেই এমন তথ্য দেয়া হয়েছে সংসদীয় কমিটিকে।
বৈঠকে আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রকে এগিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এক্ষেত্রে বিজ্ঞানীদের চাকুরীর বয়সসীমা বাস্তবতা ও কিছু নীতিমালার আলোকে নির্ধারণ করার জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
বৈঠকে কমিটি সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, মো. আব্দুর রাজ্জাক, মো. মোসলেম উদ্দীন, মো. মামুনুর রশিদ কিরন, এ, কে, এম রেজাউল করিম তানসেন, মো. নুরুল ইসলাম ওমর এবং এড. উম্মে কুলসুম স্মৃতি বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিএিডিসি’র চেয়ারম্যানসহ মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।