আগামী ৪ বছরে দারিদ্র্যের হার ১৪ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে: প্রধানমন্ত্রী
২০০৫ সালের পর থেকে দারিদ্র্যের হার ৪০ শতাংশ থেকে বর্তমানে ২৪ শতাংশে নেমে এসেছে। আগামী চার বছরে আরো দশ শতাংশ কমিয়ে ১৪ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করছি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘জাতীয় সমাজসেবা দিবস ও সমাজকল্যাণ সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পদ্মা সেতু নির্মাণে সরকারের দৃঢ় অবস্থানের কথা তুলে ধরে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ যা বলে তা করে দেখায়; ইতোমধ্যে বিশ্ববাসীও এর প্রমাণ পেয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যেটা ঘোষণা দিই সেটা বাস্তবায়ন করি। ঘোষণা দিয়েছিলাম পদ্মা সেতু করবো। পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ আমরা শুরু করে দিয়েছি। এটাও আমরা বিশ্বকে দেখিয়েছি। অন্যের কাছে হাত না পেতে আমরাও পারি।
যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার শক্তি বাংলাদেশের রয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। আমরা এগিয়ে যাবোই।
তিনি বলেন, আমরা চাচ্ছি বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে। সে লক্ষ্যে পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি; পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। আমরা অভিষ্ট লক্ষ্যে অবশ্যই পৌঁছাবো। কোনও সন্দেহ নেই।
এসময় তিনি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের গৃহহীন ও পথশিশুদের স্বাভাবিক জীবন এবং মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি এটা দেখতে চাই না কোনও শিশু রাস্তায় পড়ে গড়াগড়ি খাবে, স্কুলে যেতে পারবে না। সে এতিম হতে পারে। তাকে হয়তো টোকাই বা পথশিশু বলি আমরা। কিন্তু তাদের একটা ঠিকানা দিতে হবে। আমরা চাই না ফুটপাতে কোনও মানুষ পড়ে থাক। আমরা চাই না একটা মানুষও গৃহহারা থাক। এদেশের প্রত্যেকটা মানুষের ঘরবাড়ি থাকবে।
এসব বিষয় দেখভালের দায়িত্ব যে মন্ত্রণালয়ের সেই সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে অগ্রণী ভূমিকা রাখার নির্দেশ দেন তিনি।
বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী দেশের কৃষি, খাদ্য, শিক্ষা, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য, অবকাঠামোসহ বিভিন্নখাতে তার সরকারের সময় উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার সময় সারাদেশে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র গড়ে তোলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসেবা আমরা মানুষের দৌড়গোড়ায় পৌঁছে দিয়েছি। এতে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হচ্ছে নারীরা। খাদ্য শস্য উৎপাদন বাড়িয়ে খাদ্য নিরাপত্তা সৃষ্টি করেছি আমরা। উদ্বৃত্ত খাদ্য বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হচ্ছে। বিদ্যুতের উৎপাদনক্ষমতা ৩৭০০ মেগাওয়াট থেকে ১৩ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করা হয়েছে। এক জানুয়ারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের কাছে ৩২ কোটি ৬৩ লাখ বই পৌঁছে দিয়েছি।
এসময় অটিজম সচেতনতায় মেয়ে শেখ সায়েমা হোসেনের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অটিজম সচেতনতা বিষয়ে বিশ্বব্যাপী কাজে স্বীকৃতি স্বরূপ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সায়মা ওয়াজেদকে অ্যাওয়ার্ড অব এক্সিলেন্স ইন পাবলিক হেলথ প্রদান করেছে। শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বব্যাপী সচেতনতা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে।
বয়স্কভাতা, বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তা, দুস্থ মহিলা ভাতা, অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি কার্যক্রমসহ বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে তার সরকার ক্রমাগত বরাদ্দ বাড়াচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এছাড়া হিজড়া, দলিত, হরিজন ও বেদে সম্প্রদায়সহ সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে বৈষম্যের শিকার জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নেও আওয়ামী লীগ সরকার বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে বলে জানান শেখ হাসিনা।