শ্রীবরদী বিজ্ঞানী ডঃ মোঃ নিজাম উদ্দিন এর সাফল্য

Nizam000-150x150বিজ্ঞান গবেষণায় পৃথীবি বিখ্যাত হয়ে উঠেছেন শ্রীবরদী বিজ্ঞানী, সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ডঃ মোঃ নিজাম উদ্দিন। তাঁর গবেষণার ক্ষেএ হচ্ছে পরিবেশ বিজ্ঞান ও ম্যাটেরিয়াল্স ইঞ্জিনিয়ারিং। এই বিষয়ে গবেষণা করে তিনি স্বল্প ব্যায়ে সহজলভ্য উপাদান থেকে বিভিন্ন ধরণের আস্তরণ তৈরী করেছেন যা প্রচলিত সাধারন কাঁচের উপর ব্যবহার করে সূর্যালোকের উপস্থিতিতে পানি পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে এবং এন্টিব্যক্টেরিয়াল এজেন্ট হিসাবে ব্যবহার করা যায়। তার আবিষ্কৃত এই প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে মজা পুকুর, নালা, হাওড় ইত্যাদির দূষিত পানিসহ ইন্ডাস্ট্রি হতে নির্গত রঙ্গীন দুষিত পানিকে স্বল্প খরচে ও সহজে পরিষ্কার করা সম্ভব হবে। তার গবেষণার একটি গুরুত্বপুর্ণ সফলতা হলো আস্তরনযুক্ত একই কাঁচ বারবার ব্যবহার করা যায়।
তার অপর একটি গুরুত্বপূর্ন আবিষ্কার হচ্ছে স্টিলের উপর অল্প খরচে, সহজলভ্য উৎস হতে এবং সহজ টেকনিক ব্যবহার করে হীরার সাথে তুলনীয় দৃঢ়তার আস্তরন তৈরি। মানব দেহের রক্ত ও কোষ বান্ধব হওয়ায় এই আস্তরণ চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন ইন্সট্রূমেন্ট বিশেষ করে ভেঙ্গে যাওয়া হাড় জোড়ার কাজে ব্যবহৃত রড তৈরীতে, উড়োজাহাজ ও গাড়ির হালকা অথচ শক্তিশালী আস্তরন হিসাবে এবং ‘হীরা’র বিকল্প কাটিং টুল হিসাবে ব্যবহারের  উলে­খযোগ্য অবদান রাখবে বলে বিশষজ্ঞরা মত দিয়েছেন। তার এই উৎসাহব্যঞ্জক প্রাপ্তিগুলো নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক হাই ইমপ্যাক্ট জার্নালে ইতিমধ্যেই ৩০টিরও বেশী প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ডঃ মোঃ নিজাম উদ্দিনের আবিষ্কারের স্বীকৃতি স্বরূপ ইতিমধ্যে তার সাথে যৌথ গবেষণা প্রকল্প শুরু করেছে। এছাড়াও তিনি তুরস্ক, দনি কোরিয়া, জাপান এবং সৌদি আরবের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথ গবেষণা কাজ করে যাচ্ছেন। তার যুগান্তকারী গবেষণাকর্মকে উৎসাহিত করার জন্য তাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সস্প্রতি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রালায়ের সর্বোচ্চ গবেষণা অনুদান প্রদান করেন। তিনি ‘বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন’ এবং সিলেট শাবিপ্রবি রিসার্চ সেন্টার ছাড়াও ইটালীর “দ্যা ওয়ার্ল্ড একাডেমী অব সায়েন্স” হতে বিভিন্ন সময়ে রিসার্চ গ্র্যান্ট এওয়ার্ড প্রাপ্ত হন। ডঃ মোঃ নিজাম উদ্দিন বিগত সময়ে জাপান সরকারের মনবসো, নাকাজিমা ফাউন্ডেশন, কোরিয়ান রিসার্চ ফাউন্ডেশন ও তুরস্কের প্রতিরা মন্ত্রণালয়ের ফেলোসিপ লাভ করেন।
সম্প্রতি তিনি আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে সফর করে এসেছেন। এসময় তিনি আমেরিকার সানফ্রানসিসকোতে ‘ন্যানোটেক এন্ড এক্সপো-২০১৪’ আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে তার প্রযুক্তি বিষয়ক বক্তব্য এবং ডেভিসের ক্যালিফর্নিয়া ইউনিভার্সিটিতে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে বিভিন্ন ল্যাব পরিদর্শন ও বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এছাড়াও তিনি ম্যারিল্যান্ডের কপ্পিন স্ট্যাট ইউনিভার্সিটিতে “দ্যা আর্নেস্ট জাস্ট/পার্সি জুলিয়ান লেকচার সিরিজ” এ অতিথি বক্তা হিসাবে প্রযুক্তি বিষয়ক ভাষণ প্রদান করেন। তার এই সফরের যাবতীয় খরচ বহন করে ইটালীর “দ্যা ওয়ার্ল্ড একাডেমী অব সায়েন্স, ক্যালিফর্নিয়া ইউনিভার্সিটি এবং কপ্পিন স্ট্যাট ইউনিভার্সিটি।

শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার গোপালখিলা গ্রামের মরহুম প্রধান শিক মোঃ শামছুল হক এবং নাজমিনা হকের কনিষ্ট ছেলে এবং শেরপর শহরের নারায়নপুরের কৃষিবিদ মোঃ ফজলুল করিম ফটু এবং মমতাজ খানম এর জামাতা ডঃ মোঃ নিজাম উদ্দিন তাজবীহ তাবাসসুম সাকুরা এবং ইয়াছিন নিজাম নামের দুই সন্তানের জনক। তার স্ত্রী মারজুমাননেছা কান্তা। তিনি গোপালখিলা উচ্চ বিদ্যালয় ও শ্রীবরদী সরকারী কলেজে পড়ালেখা করেন। পরে তিনি সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হতে রসায়নে সম্মানসহ স্নাতক ও মাস্টার্স, বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি (বুয়েট) হতে এমফিল, জাপানের সাগা ইউনিভার্সিটি হতে মেটিরিয়াল্স ইঞ্জিনিয়ারিং এ মাস্টার্স ও পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করেন। তাছাড়া তিনি জাপান, দনি কোরিয়া এবং তুরস্কের বিভিন্ন নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় হতে পোষ্ট ডক্টরেট করেন। তিনি ইন্ডিয়া, জাপান, মালয়েশিয়া, দনি কোরিয়া, তুরষ্ক, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের বহু বৈজ্ঞানিক সেমিনার-সিম্পজিয়ামে অংশগ্রহণ করেছেন।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend