আরও কঠোর হবেন প্রধানমন্ত্রী; গুলশান অফিসের খালেদা বেশী ঝুঁকিপূর্ণ

PMবিএনপি চেয়ারপারনের গুলশানে অবস্থান সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে পারে- এমন আশঙ্কা করছেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা। পার্টি অফিসে অবরুদ্ধ খালেদাকে বেশী ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছেন তারা। এ জন্য সারাদেশে চলমান নাশকতায় উস্কানি ও ইন্ধনের অভিযোগে প্রয়োজনে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বৃহস্পতিবার রাতে আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটি ও উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হযেছে। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা প্রধানমন্ত্রীর এমন ইঙ্গিতের কথা জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘বৈঠকে খালেদা জিয়ার কোনো বিষয় নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়নি। সারাদেশের নাশকতা দেখভালের জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী রয়েছে।’
বৈঠকে উপস্থিত আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, খালেদা জিয়া কিংবা বিএনপির চলমান আন্দোলনকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিন্দুমাত্র ছাড় দিবেন না। প্রধানমন্ত্রী তার মেয়াদপূর্তির একদিন আগেও নির্বাচন না দিতে বদ্ধপরিকর। এ জন্য তিনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতেও নির্দেশনা দিবেন।
জানা গেছে, যারা নাশকতা করছে তাদের ব্যাপারে জিরো টলারেন্সের নীতি গ্রহণ করবেন প্রধানমন্ত্রী। নাশকতা যেই করুক প্রধানমন্ত্রী কাউকেই ছাড় দিবেন না। প্রয়োজনে নাশকতাকারীদের শীর্ষনেতাকেও গ্রেফতার বা আটকে পিছপা হবেন না প্রধানমন্ত্রী। এমন ইঙ্গিতও বৈঠকে দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে অবস্থান নিয়ে অস্বস্তির মধ্যে রয়েছে আওয়ামী লীগ। গুলশান এমনিতেই কূটনৈতিক এলাকা। খালেদা জিয়ার বাড়ির আশপাশের অধিকাংশ বাড়িই বিদেশীদের বাসস্থান।
রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, খালেদা জিয়া গুলশানে দীর্ঘদিন অবস্থান করলে সেখানে বিএনপির নেতা-কর্মী-সমর্থকদের জমায়েত ধীরে ধীরে বাড়তে পারে। যা পুলিশের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। এক পর্যায়ে জমায়েত বড় আকার ধারণ করলে তা ডেকে আনতে পারে মিশরের তাহরীর স্কয়ারের পরিণতি। যা খালেদা জিয়ার নয়াপল্টনে অবস্থানের চেয়েও সরকারের জন্য হবে ভয়ানক। বিষয়টি সরকারের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার এ জন্যই খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ের তালা খুলে দেওয়া হয়েছে। আর মহিলা দলের পাঠানো খাবার পুলিশ গুলশান কার্যালয়ে নিয়ে যেতে দেয়নি। যাতে করে বিএনপি নেত্রী একপর্যায়ে গুলশান কার্যালয় ছাড়তে বাধ্য হন।
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বিএনপি নেত্রী গুলশানের কার্যালয় না ত্যাগ করলে সেখানে তাকে আরও কঠোরভাবে অবরুদ্ধ করা হবে। প্রয়োজনে গ্রেফতারও করা হতে পারে।
এ বিষয়ে বৈঠকে উপস্থিত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের দলের পক্ষ থেকে ব্রিফিং করা হয়েছে। এর বাইরে আমি কিছু বলতে পারব না।’
জানা গেছে, বৈঠকে ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশের সিদ্ধান্ত হয়। সমাবেশ ১০ জানুয়ারি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ইজতেমার আখেরী মোনাজাতের কারণে তা পিছিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
(সূত্র: দ্য রিপোর্ট)

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com