১২ জানুয়ারি নিয়ে আওয়ামী লীগের বহুমাত্রিক ছক
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে পুর্ননির্ধারিত ১২ জানুয়ারির সমাবেশ নিয়ে বহুমাত্রিক পরিকল্পনা করছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এদিন ঢাকায় বিএনপি সমাবেশ বা জমায়েতের চেষ্টা করলে আওয়ামী লীগ নিজেদের সমাবেশ স্থগিত করে সারা ঢাকায় সতর্ক অবস্থান নিতে পারে। প্রশাসনও সভা-সমাবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
বিশ্ব ইজতেমার পরপরই ১২ জানুয়ারি বিএনপি নেতা কর্মীরা যাতে ঢাকায় প্রবেশ করে কোনো ধরণের নাশকতা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্যই এমন প্রস্তুতি রাখছে আওয়ামী লীগ। দলটির কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা দ্য রিপোর্টকে এমন খবর নিশ্চিত করেছেন।
১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের মহাসমাবেশ করার কথা ছিল। ইজতেমার কারণে বৃহস্পতিবার রাতে তা পিছিয়ে ১২ জানুয়ারি পুর্ননির্ধারণ করা হয়েছে। আর ৯ জানুয়ারি শুরু হওয়া বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাত ১১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।
সূত্র মতে, ১০ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের সমাবেশ ছিল পূর্বনির্ধারিত। ১১ জানুয়ারি ইজতেমার আখেরি মোনাজাতের পর ১২ জানুয়ারি বিএনপি ঢাকায় বড় ধরনের জমায়েত করতে পারে এমন সংবাদ রয়েছে আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকদের কাছে। এজন্যই আওয়ামী লীগ ইজতেমার কারণে সমাবেশ পেছানোর কথা বললেও প্রকৃত কারণ বিএনপিকে প্রতিরোধ করা। এরই অংশ হিসেবে ১২ জানুয়ারি ঢাকার সোহরাওয়ার্দীতে বড় ধরনের জমায়েত আর অন্য এলাকায় সতর্ক অবস্থান নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে আওয়ামীলীগ।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, ১২ তারিখ ঢাকায় বিএনপিকে কোনোভাবেই জমায়েত বা নাশকতা করতে দেওয়া হবে না। এজন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদেরও সর্বোচ্চ সতর্কতা বজায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত যাতে ঢাকায় প্রবেশ করে কোনো ধরনের নাশকতা সৃষ্টি করতে না পারে এজন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি এলাকাভিত্তিক নেতা-কর্মীদেরও সতর্ক অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ১২ জানুয়ারির সমাবেশসহ দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবার রাতে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামসহ জেষ্ঠ্য নেতাদের নিয়ে বৈঠকও করেছেন।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির সমর্থকরা যাতে গাজীপুর ও অন্যান্য এলাকা থেকে ঢাকায় প্রবেশ করতে না পারেন সেজন্য ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলার শীর্ষ নেতা ও সংসদ সদস্যদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকও করবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। বৈঠকটি শনিবার সকালে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমণ্ডির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘আমরা মহানগরের বর্ধিত সভা থেকে ১২ তারিখের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মহাসমাবেশ সফলের প্রস্তুতি নিতে নেতা-কর্মীদের বলেছি। আমরা যে কোনো অবস্থা মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত। কেন্দ্র থেকে কোনো ধরনের নির্দেশনা আসলে আমরা তখন নতুন করে সিদ্ধান্ত নিব।’
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ‘আপনারা সাংবাদিকরাই বিএনপিকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। বিএনপিতো এখন মুসলিম লীগের চেয়েও জনসমর্থনহীন। এরা ঢাকায় আবার কি আন্দোলন করবে। তবে, নাশকতা করার পরিকল্পনা করলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। আমাদের নেতা-কর্মীরা সবাই সজাগ ও প্রস্তুত রয়েছেন।’