আকাশেই জন্মাল শিশু
কয়েক হাজার ফুট ওপর দিয়ে উড়ছিল বিমানটি। হঠাৎই প্রসববেদনায় আর্তনাদ করে উঠলেন এক অন্তঃসত্ত্বা যাত্রী। খবর পেয়ে ছুটে এলেন কয়েকজন বিমানবালা। তাঁদের সহায়তায় উড়ন্ত বিমানেই নিজের সগর্ব উপস্থিতির জানান দিল ফুটফুটে এক কন্যাশিশু। তার কান্নার শব্দে যাত্রীদের মুখ থেকে মুছে গেল উৎকণ্ঠার রেখা। প্রশান্তির হাসি হাসলেন প্রসূতি মা।
আজ শুক্রবার লেবানন থেকে ঢাকায় আসার পথে এয়ার এরাবিয়ার একটি বিমানে এ ঘটনা ঘটে। সন্তানের জন্মদানকারী নারীর নাম জেসমিন আক্তার।
জেসমিনের সঙ্গে আসা কয়েকজন যাত্রী জানান, উড়োজাহাজের ভেতরেই জেসমিনের প্রসববেদনা ওঠে। প্রচণ্ড ব্যথায় কাতর জেসমিন আক্তারকে নিয়ে তখন নেমে আসারও কোনো উপায় নেই। উড়োজাহাজটি তখন উড়ছে কয়েক হাজার ফুট ওপর দিয়ে। লেবানন থেকে রওয়ানা হয়ে বাংলাদেশে আসতে আরও প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় লাগবে। এ অবস্থায় জেসমিনের সাহায্যে এগিয়ে আসেন এয়ার এরাবিয়ার কর্মীরা। তাঁদের চেষ্টায় উড়োজাহাজের ভেতরই একটি ছোট্ট ফুটফুটে কন্যাশিশুর জন্ম দেন জেসমিন।
শিশুটি জন্ম নেওয়ার প্রায় ২০ মিনিট পর শ খানেক যাত্রী নিয়ে হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে নামে উড়োজাহাজটি।
প্রত্যক্ষদর্শী ঢাকা কাস্টমস হাউসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোস্তফা জামাল বলেন, মায়ের ক্লান্ত মুখে ছিল হাসি। তবে কোনো ঝুঁকি নেওয়া হয়নি। তাই হাসপাতালের পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
শাহজালাল বিমানবন্দরে এয়ার এরাবিয়ার ব্যবস্থাপক (অপারেশন) হারুনুর রশিদ জানান, বিমানবালাদের সহযোগিতায় শিশুটি জন্ম হয়েছে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঢাকায় অবতরণের সঙ্গে সঙ্গেই মা ও শিশুকে অ্যাম্বুলেন্সে করে উত্তরার জাহান আরা ক্লিনিকে পাঠিয়ে দিয়েছি।’
জাহান আরা ক্লিনিকের হিসাবরক্ষক সোহাগ মল্লিক জানান, হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর বিকেলে সন্তানসহ জেসমিনকে তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
জেসমিনের স্বজন রুস্তম আলী জানান, স্বামী নাসির উদ্দিনের সঙ্গে লেবাননে চাকরি করেন জেসমিন। দেশে বাচ্চা জন্ম দেওয়ার জন্যই তিনি ফিরছিলেন। আলট্রাসনোগ্রামের প্রতিবেদনে বাচ্চার জন্মের তারিখ ছিল ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে। স্বামী ব্যস্ত থাকায় তাঁকে ছাড়াই তিনি একা দেশে ফিরছিলেন।