‘ভারতের ফোনে সরকার নড়ে চড়ে বসেছে’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ভারতের সরকার দলের (বিজেপি) সভাপতি অমিত সাহা ফোন করায় সরকার নড়ে চড়ে বসেছে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে শনিবার বিকেলে এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন। ‘উজানে পানি প্রত্যাহার : বাংলাদেশের মহাবিপর্যয়’ শীর্ষক এই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে ভাসানী অনুসারী পরিষদ।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ৪৩ বছর পরেও আমরা যেন ধীরে ধীরে নতজানু হয়ে যাচ্ছি। বিভিন্ন দেশের স্বার্থ রক্ষিত হল কিনা তাতেই যেন আমাদের নেতাদের নজর বেশী। ভারত থেকে খালেদার কাছে সামান্য একটা ফোন আসাতেই সরকার ভয় পেয়েছে। ফোন দিয়ে শারীরিক সুস্থতার কথা জিজ্ঞাসা করতেই আওয়ামী সরকার নড়ে চড়ে বসেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতা নেতৃরা মুখে জাতীয় ঐক্যের কথা বললেও প্রকৃতপক্ষে হাসিনা-খালেদা কখনোই এক হবে না। পানি বণ্টন চুক্তির মতো কোনো নির্দিষ্ট বিষয়েও তারা এক হতে পারবে না। তাই দেশের সবাইকে এ সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এক হতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের মানুষও এখন আর দলবাজি পছন্দ করে না। দেশে কোনো বড় রাজনৈতিক দল থাকতে হবে তাই মানুষও ওদের সঙ্গে আছে। কিন্তু বেশী বাড়াবাড়ি করলে মানুষ তাদেরকে আর পছন্দ করবে না। কারণ এ দেশের মানুষ দেশপ্রেমিক।’
মান্না বলেন, ‘আমার মনে হয় দেশের মানুষ এই বড় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি বিরক্ত। সবাই হয়তো নতুন কিছু খুঁজছে। কোনো একটি ইস্যু নিয়ে সাধারণের ভেতর থেকেই নতুন কোনো শক্তি বের হয়ে আসতে পারে।’
আমার দেশ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাকালীন সম্পাদক আমান উল্লাহ কবীর বলেন, ‘বর্তমানে দেশের ভাগ্য নিয়ন্ত্রক এবং রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রক হয়ে গেছে ভারত। আমাদের নেতারাও ভারতের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলেন না। ভারতকে খুশি রাখতেই তারা ব্যস্ত। নেতারা মনে করছে ভারতকে ছাড়া ক্ষমতায় যেতে এবং ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না।’
অপরদিকে, পানি চুক্তির কথা অনকে বছর ধরে আমরা বলে আসলেও ভারত প্রকৃতপক্ষে কোনো আলোচনার কথা বা সমাধানের কথা বলছে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্র নীতিতেও জাতীয় স্বার্থের ঐক্যমতের প্রতিফলন নেই। সেই সুযোগটাই নিচ্ছে ভারত। তাই নিজেদের স্বার্থের প্রতিফলন সকল ক্ষেত্রেই থাকতে হবে।’
এ সময় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতিসংঘের সাবেক পরিবেশ ও পানি বিশেষজ্ঞ ড. এস আই খান।
তিনি বলেন, ‘ভারত ব্যারেজ নির্মাণের মাধ্যমে পানির স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে ভাটিতে পানির প্রবাহ বন্ধ করেছে। পানির প্রবাহ না থাকায় আমাদের কৃষি উৎপাদন জীব বৈচিত্রসহ স্বাভাবিক জীবন যাত্রা ব্যহত হচ্ছে।’
ইতোমধ্যে ফারাক্কার বিরূপ প্রভাবে দেশের উত্তরাঞ্চলে মরুকরণ পক্রিয়া শুরু হয়েছে। আবার নতুন করে ১৬টি ব্যারেজ নির্মাণের সিদ্ধান্ত খুবই ন্যক্কারজনক বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ভারতের একতরফা বাঁধ নির্মাণের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে আমাদের নদীর পানির দাবি জাতিসংঘের পানি কমিটিতে উপস্থাপন করতে হবে বলেও জানান তিনি।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কবীর চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, হায়দার আকবর খান রনো প্রমুখ।