খালেদাকে মতিয়া : দুর্নীতির বরপুত্রের মা এবার ভূয়ায় চ্যাম্পিয়ন হচ্ছেন
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, দুর্নীতির বরপুত্রের মা এবার ভূয়ায় চ্যাম্পিয়ন হচ্ছেন। তিনি চ্যালেঞ্জ করে বলেন, ভারতের বিজেপি প্রধান অমিত শাহ’র টেলিফোন ভূয়া। ২৮টি মামলার আসামিকে দিয়ে কংগ্রেসম্যানদের নামে দেওয়া বিবৃতিও ভূয়া প্রমাণিত হয়েছে। তাকে যদি অমিত শাহ ফোন করে থাকেন,তাহলে তিনি ফোন রেকর্ড প্রকাশ করছেন না কেন? আসলে তার জন্মদিন ভূয়া, সার্টিফিকেট ভূয়া, টেলিফোন ভূয়া- সবই ভূয়া। তিনি ১৩ জানুয়ারী মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শেরপুরের নকলা উপজেলা পরিষদ চত্বরে নকলা পৌরসভা, গৌড়দ্বার ও সদর ইউনিয়নের মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে শীতবস্ত্র ও স্বেচ্ছাসেবী নারী সংগঠনের মাঝে অনুদানের চেক বিতরণকালে ওইসব কথা বলেন।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, খালেদা জিয়া এক দিকে হটকারী, অন্য দিকে হিংসুক। তার সময় আওয়ামী লীগ সমর্থিতরা সমস্ত কিছু থেকে বঞ্চিত হয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনার সময়ে অনুদান-সহায়তা প্রদানে দলীয় বিবেচনাকে প্রাধান্য দেওয়া হয় না। সকলেই এ সরকারের সুবিধা ভোগ করছেন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় বসলেই দেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়। তার পুত্র তারেক রহমান দুর্নীতির বরপুত্রে পরিণত হন। ক্ষমতা হারানোর যন্ত্রণায় খালেদা জিয়া তিন দফায় সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার সরকারকে চাপে রাখার কৌশল হিসেবে এখন ভূয়া তথ্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্তে ফেলার ষড়যন্ত্র করছেন। আর তারেক রহমান বিদেশে বসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সম্পর্কে আলতু-ফালতু কথা বলে ‘বিশ্ব বেয়াদব’ বনে যাচ্ছে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী জাতীয় সংসদ নির্বাচন না হলে ২০০৬ এর মত আরেকটি ওয়ান ইলেভেন হতো। বিএনপি নেত্রী সেটাই চেয়েছিলেন। তিনি বলেন, চৈত্র মাসের গল্প মাঘ মাসে বলে লাভ নেই। প্রধানমন্ত্রী নিজে ফোন করে বেগম জিয়াকে সংলাপের কথা বলেছিলেন। তখন তিনি তা প্রত্যাখান করেছিলেন। এখন নির্বাচন হয়েছে। সরকার এগিয়ে যাচ্ছে। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালে আরেকটি নির্বাচন হবে। সেই পর্যন্ত সবাইকে অপেক্ষা করতে হবে। মন্ত্রী বলেন, মানুষ মেরে, মানুষ পুড়িয়ে, যা খুশি তাই করে বিএনপি নেত্রী যদি মনে করেন কিছু করতে পারবেন, তাহলে তিনি ভুল করছেন। ইতোমধ্যেই আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের আস্থা অর্জন করেছে। আমরা মানুষের জন্য কাজ করবো। বেগম জিয়া ধ্বংস নিয়ে কতদুর যাবেন, সেটা তিনি ঠিক করবেন।
তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড’ বলেই সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে শিক্ষিত, মেধাবী ও দক্ষ জাতি গঠনে শেখ হাসিনার সরকার এ খাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে আসছেন। সরকারের যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের কারণেই ৬ বছর যাবত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা বছরের প্রথম দিনেই বিনামূল্যে নতুন বই পাচ্ছে। ফলে শিার্থীর সংখ্যা বাড়ছে, কমছে ঝরে পড়া। এবারও ৪ কোটি ৪৪ লাখ শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দেওয়ার কাজটি সুষ্ঠুভাবেই করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিনামূল্যে বই বিতরণ বিশ্বের ইতিহাসে বিরল। বিশ্বের অনেক ধনী দেশও বিনামূল্যে বই দিতে পারেনি। শেখ হাসিনার সরকার পেরেছে বলেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বের রোলমডেল হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে।
শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে যারা ষড়যন্ত্র করেছিল, তারা আজ ভয় পেয়ে গেছে উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, তাদের ষড়যন্ত্র এখনও অব্যাহত রয়েছে। তারা হরতাল-অবরোধের নামে জ্বালাও-পোড়াও এবং শিক্ষা ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করতে চায়। তিনি বলেন, মুখে ইসলামের কথা বললেও তারা বিশ্ব ইজতেমার সময়েও অবরোধ চালিয়ে যায়। এজন্য দেশের মানুষ এখন তাদের ওইসব কর্মসূচি প্রত্যাখান করেছে।
এদিন কৃষিমন্ত্রী ২শ ৮০জন মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে একটি করে কম্বল ও সোয়েটার এবং ৬টি নারী উন্নয়ন সংস্থার মাঝে অনুদানের চেক বিতরণ করেন। ওইসময় শেরপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোঃ হায়দর আলী, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান, নকলা উপজেলা চেয়ারম্যান মাহবুব আলী চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ্ মো: বোরহান উদ্দিন, ডা. রফিকুল আলম, আ’লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ, ফেরদৌস রহমান জুয়েলসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা ও দলীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।