মনে হয় আলোচনায় বসতেই হবে : এরশাদ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে তার বিশেষ দূত ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, ‘আমি ১ জানুয়ারি সমাবেশে আশঙ্কা করে বলেছিলাম, দেশে আবারও জ্বালাও-পোড়াও শুরু হবে। সব রাজনৈতিক দলগুলোকে ডাকুন। তিনি আমার কথা শুনলেন না। শেষ পর্যন্ত মনে হয় আলোচনায় বসতেই হবে।’
রাজধানীর কাকরাইলে শনিবার বিকেলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলটির শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
এরশাদ আরও বলেন, ‘আমি শান্তির ডাক দিয়েছি। আসুন এ আন্দোলনকে বেগবান করি। জাতীয় কনভেনশন করি। কী করলে শান্তি আনা যায় সেই পথ বের করি।’
তিনি বলেন, ‘জনগণকে আহ্বান জানাই, আপনারা চুপ করে থাকবেন না। রাস্তায় নেমে আসুন। এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এদের পরিত্যাগ করুন। শান্তি চাইলে পরিবর্তন করতেই হবে। আজ না হয় কাল পরিবর্তন করতেই হবে।’
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ-বিএনপির অপরাজনীতি থেকে মুক্তি চায়। দেশের মানুষ দুই দলমুক্ত বাংলাদেশ চায়। এভাবে বসে থাকলে চলবে না। এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। এদের ঘৃণা করুন। আমরা শান্তির রাজনীতি চাই।’
এরশাদ বলেন, ‘জাতি আজ এক মহাদুর্যোগে। সুনামি, ঘূর্ণিঝড় এগুলো প্রাকৃতিক। এবারের মহাদুর্যোগ মানুষের সৃষ্টি। মানুষের প্রতি মানুষের কোনো সহমর্মিতা নেই। দেশে এখন চলছে বর্বরতা, হিংস্রতা। মানুষের রক্ত নিয়ে হলিখেলা চলছে। আমরা শুধু চাই ক্ষমতা। যারা এগুলো করছেন তারা কি মানুষ না?’
তিনি বলেন, ‘মানুষ মেরে কি ক্ষমতায় আসা যায়। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য কত লাশ দরকার আপনাদের? নতুন বছরে আপনারা জাতিকে কী উপহার দিয়েছেন? ২৫টি লাশ, ২৮ জন মৃত্যু শয্যায়, খাবার শূন্য দিনমুজুরের ঘর?’
বিএনপিকে উদ্দেশ করে এরশাদ বলেন, ‘ইজতেমার মধ্যে অবরোধ প্রত্যাহার করলেন না? কোন ধরনের মুসলমান আপনারা। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আমরা রাজনীতি করি। মানুষ মেরে আপনারা মানুষের কী ভাগ্য পরিবর্তন করবেন? যারা মারা যাচ্ছে তারা তো কেউ রাজনীতি করেন না?’
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘একটি দল জনগণকে জিম্মি করে রাজনীতি করতে চায়। দেশ ধ্বংস হচ্ছে। কলকারখানা বন্ধ হচ্ছে। জনগণ ক্ষমতার উৎস। আপনারা কাকে পুড়িয়ে মারছেন। সরকারের দায়িত্ব জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া। সরকার ব্যর্থ। এই ব্যর্থতার জন্য সরকারকে জবাবদিহি করতে হবে।’
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) আহ্বায়ক সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার সভাপতিত্বে শান্তি সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন— জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ফয়শল চিশতী, আবুল কাশেম, এম এ হান্নান, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, যুব সংহতির সভাপতি এ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, মহিলা পার্টির সাধারণ সম্পাদক অনন্যা হুসেইন মৌসুমী, স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সদস্য সচিব মোবারক হোসেন আজাদ, ছাত্র সমাজের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিরু, মৎস্যজীবী পার্টির আহ্বায়ক সোমনাথ দে প্রমুখ।