পর্নো খোঁজায় প্রথম ৮ দেশের ৬টি মুসলিম, শীর্ষে পাকিস্তান
পৃথিবীর ভৌগলিক অবস্থানের কারণে মানুষে মানুষে যেমন অনেক বিভেদ আছে, তেমনি আছে অনেক মিল। কিছু মিল আবার প্রায় সকল মানুষকেই একই সূতোয় গাঁথে। যদি প্রশ্ন করা হয়, কি হতে পারে সেই মিলগুলো? তাহলে হয়তো কেউ বলবে খাবার, আবার কেউ বলবে শিক্ষা। কিন্তু গুগলের তথ্য-উপাত্তে বেরিয়ে এসেছে সম্পূর্ণ নতুন একটি মিলের খবর। আর সেটা হলো- অনলাইন পর্নো। আর সেই পর্নো সার্চের তালিকায় সবচেয়ে উপরের ৮টি দেশের ৬টিই মুসলিম রাষ্ট্র।
বস্তুত এর মাধ্যমে প্রমাণ হলো, পর্নোগ্রাফির একটা বড় বাজার হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য। পর্নোগ্রাফি সার্চের তালিকায় যে ৬টি মুসলিম দেশ রয়েছে, তাদের মাঝে প্রথম অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান। আর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে মিসর। এরপর একে একে ইরান, মরক্কো, সৌদি আরব ও তুরস্ক অবস্থান। আর এরপর আছে সিরিয়া, ইরাক, লেবানন।
এদিকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে কোন শব্দ সার্চ দিয়ে সবচেয়ে বেশি পর্নো সার্চ করা হয় সেটাও প্রকাশ করা হয়েছে। এসব তথ্য উপাত্ত দেখলে আরব বিশ্বে ও মুসলিম দেশগুলোতে পর্নোগ্রাফির ব্যাপক বিস্তার সম্পর্কে খানিকটা ধারণা পাওয়া যায়।
এর মধ্যে পাকিস্তান থেকে সবচেয়ে বেশি যেসব পর্নো সার্চ করা হয়, তার মধ্যে আছে কুকুর, গাধা, বিড়াল ও সাপের সেক্স!
পর্নোএমডি’র বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ইরাক, সিরিয়া ও ইরানে ‘ক্রিমি স্কার্ট (creamy squirt), ব্লো-জব শব্দগুলো দিয়ে সবচেয়ে বেশি পর্নো সার্চ করা হয়। সমগ্র আরব বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বার পর্ন দেখা হয়েছে আরব (Arab) শব্দটি দিয়ে। ‘Pain’ শব্দটি ইরাকে পর্নো সার্চ টার্মের চতুর্থ অবস্থানে আছে। সিরিয়ায় পর্নো সার্চ টার্মের মধ্যে ‘father-daughter’ ও ‘brother-sister’ যথাক্রমে চার এবং পাঁচে আছে। ‘mother’, ‘mom’ শব্দগুলো মিসরের পর্নো সার্চ টার্মের প্রথম দশের মধেই আছে।
এই তথ্যগুলো শুধু আরব বিশ্বে পর্নোগ্রাফির বিস্ফোরণই প্রমাণ করছে না, একই সঙ্গে এই অঞ্চলের মানুষের মূল্যবোধকেও একটা বড় প্রশ্নের মুখোমুখী করে দিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, শুধুমাত্র লেবানন এবং তুরস্ক ছাড়া বাকি সব আরব দেশেই উত্তেজক ছবি তৈরি ও বিক্রির ব্যাপারে কড়া নিষেধাজ্ঞা আছে।
২০০৯ সালে ইরাকের সংস্কৃতি মন্ত্রী নাসের-আল-হামোদ জনগণের জন্য ক্ষতিকর এবং খারাপ প্রভাব সৃষ্টিকারী যেকোনো কিছু উৎপাদন বন্ধে আইন করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আমাদের সমাজ অবশ্যই বাকস্বাধীনতা ও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। কিন্তু তার মানে এই নয়, যা মানুষের নৈতিক অবক্ষয় ঘটাবে, তাও তৈরি করতে দেবো আমরা।
অতি সম্প্রতি সৌদি আরবে প্রায় নয় হাজার টুইটার অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করে দেয়া হয়েছে, যেগুলোতে পর্নোগ্রাফি উপাদান ছিলো। এমনকি এসব অ্যাকাউন্টের অনেক মালিককে গ্রেফতারও করেছে সৌদি সরকার। কিন্তু তারপরও এখনো দেশটির ফুটপাত থেকে শুরু করে শপিংমলগুলোতে পর্নোগ্রাফির সিডি খুবই সহজলভ্য।
আরব বিশ্বের নেতারা সবসময়ই সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্য যেকোনো জায়গায় সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়কে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখে। কিন্তু এসব তথ্য এই অঞ্চলের তরুণদের ভাবনা তাদের নেতাদের থেকে কতটা ভিন্ন, তারই একটি প্রমাণ।
এক নম্বর পর্নস্টার মিয়া খলিফা
মিয়া খলিফা লেবানন বংশোদ্ভুত একজন মার্কিন নাগরিক। অনলাইন ভোটারদের ভোটে সম্প্রতি এক নম্বর পর্নোস্টার নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। বিশ্বের ৭৩ নম্বর সাইট পর্নোহাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেছেন, শুধুমাত্র মিয়া খলিফার কারনেই এক সপ্তাহে প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ নতুন ভিজিটর তাদের সাইট ভিজিট করেছেন।
এ ঘটনার পর লেবাননে তার বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। লেবানিজরা বলছেন, যে অল্প কয়জন লেবানিজ নারী বিশ্ব মিডিয়ায় শিরোনাম হয়েছেন তাদের একজন আবার পর্নোস্টার হয়ে খবরের শিরোনাম হচ্ছেন? এটা আমাদের জন্য লজ্জার।
মিয়া খলিফা একাই নন, এর আগেও তুর্কি অভিনেত্রী সিলা শাহিন প্লেবয় ম্যাগাজিনের জার্মান ভার্সনের জন্য নগ্ন হয়ে পোজ দিয়েছিলেন। তখনও অনেকে তার বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল। কিন্তু তারপরও আরব বিশ্বে পর্নোগ্রাফি উৎপাদন থেমে নেই।