শেরপুরের গারো পাহাড়ে বৃক্ষ লুটপাটের মহোৎসব
ঝিনাইগাতী (শেরপুর) প্রতিনিধি:
শেরপুরের গারো পাহাড়ের বনাঞ্চালে বৃক্ষ লুটপাটের মাহোৎসব চলছে। স্থানীয় কাঠ চোর সিন্ডিকেটের সদস্যরা গারো পাহাড়ে কর্মরত বন বিভাগের এক শ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা- কর্মচারী ও সামাজিক বনের অংশীদারের যোগসাযশে বৃক্ষ লুটপাট চালিয়ে আসছে। ময়মনসিংহ বন বিভাগের শেরপুর সীমান্তে বালিজুরি, রাংটিয়া ও মধুটিলা ৩টি রেঞ্জের আওতায় হাজার হাজার হেক্টর জমিতে অংশীদারিত্বের ভিক্তিতে সামাজিক বনায়ন সৃজন করা হয়। এ ছাড়া বিশাল এলাকাজুরে প্রাকৃতিক শালবন সহ- রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ। অনুসন্ধানে জানা গেছে বনের এসব গাছ বেড়ে উঠার পূর্বেই কাঠ চোর সিন্ডিকেটের সদস্যরা নির্বিচারে নিধর করে ফেলছে। বর্তমানে কাঠ চোর সিন্ডিকেটের সদস্যরা প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা মূল্যের বৃক্ষ নিধন করে ট্রাক ও ট্রলি যোগে শেরপুর জেলা সদরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করা হচ্ছে। চলতি বছর শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই শেরপুর জেলার ইট ভাটা গুলোতে জ্বালানি হিসেবে অবাধে কাঠ পুরানো হচ্ছে। আর এবস জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করা হচ্ছে গারো পাহাড়ের বনাঞ্চল থেকে সরেজমিনে অনুসন্ধানে দেখা গেছে গারো পাহাড়ের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন- বাজার, পাড়া মহল¬া, সহ বিভিন্ন পয়েন্ট পাল্ল¬া ঝুলিয়ে অর্ধ শতাধিক ব্যবসায়ী অবাদে চোরাই কাঠ বেচা-কোনা করে আসছে। বাকাকুড়া গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী মোঃ ফরিদ মিয়া ও ফারুক মিয়ার সাথে কথা হলে তারা জানান, প্রতিমন কাঠ তারা ক্রয় করছেন একশত টাকায়। আর বিক্রি হচ্ছে একশত বিশ টাকায়। তারা আরও জানান বাকাকুড়া, গান্ধিগাঁও, পানবর, রাংটিয়া, নওকুচি এলাকায় তাদের মত পাল্ল¬া ঝুলিয়ে অর্ধ শতাধিক কাঠ ব্যবসায়ী ব্যবসা করে আসছেন। জানা যায়, বন-বিভাগের লোক বলের অভাব ও রাজনৈতিক হস্ত ক্ষেপের কারণে কাঠ চুরি রোধে হিমসিম খাচ্ছে বন-বিভাগ। মাঝে মধ্যেই অভিযান চালিয়ে চোরাই কাঠ আটক ও করা হচ্ছে। কিন্তু চোড়াই কাঠ আটক করার পর রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন মহল থেকে তা ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ আসছে। আর ছেড়ে না দিলে বন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শুরু হচ্ছে নানা ষড়যন্ত্র। বাকাকুড়া গ্রামে বাসিন্দা কাংশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আনারউল¬াহ, অংশীদার, তাঁরা মিয়া ও ইউনুছ আলী বলেন ব্যবসায়ীরা কাঠ চোর সিন্ডিকেটের সদস্যদের অগ্রীম টাকা দিয়ে তাদের কাঠ চুরি করতে উদ্ধোধ্য করছে। ব্যবসায়ীদের উৎসাহ পেয়ে চোর সিন্ডকেটের সদস্যরা অবাধে বৃক্ষ নিধরন করে চলেছে। সুত্র জানায়, কাঠ চোর সিন্ডিকেটের সদস্যরা কাঠ কাটার পর প্রমাণ নিশ্চিহ্ন করার জন্য গাছের গোড়াগুলো উপরে ফেলা হচ্ছে। গত দু-মাসে ২০০৭ সালের গান্ধিগাঁও এলাকার ১০ হেক্টর জমির সৃজিত বাগান কাঠচোর সিন্ডকেটের সদস্যরা কেটে নিয়ে বিড়ান ভূমিতে পরিণত করার দৃশ্য ঘুড়িয়ে দেখান এবং বলেন, বৃক্ষ লুটপাটের কথা। প্রতিদিন পুরো গারো পাহাড় থেকে ৫০/৬০ টি ট্রলি ভর্তি চোড়াই কাঠ দিনে রাতে পাচার হচ্ছে। জানা গেছে, বন বিভাগ এসব চোরাই কাঠ পাচারের ক্ষেতে ব্যবসায়ীদের নিলামে কাঠ দেখিয়ে অর্থের বিনিময়ে ছাড়পত্র দিচ্ছেন। আর ব্যবসায়ীরা বাধাহীন ভাবে চালিয়ে আসছে চোরাই কাঠের ব্যবসা। পরিবেশ বিদদের মতে কাঠ চুরির ক্ষেতে এ অবস্থা চলতে থাকলে সৌন্দর্যের লীলা ভূমি গারো পাহাড় বৃক্ষ শূন্য হয়ে পড়ার পাশাপাশি সরকার বঞ্চিত হবে বিপুল পরিমাণে রাজস্ব আয় থেকে। এ ব্যাবপারে শেরপুরের সহকারী বন সংরক্ষক মামুনূর রশিদ সাথে কথা হলে তিনি বন-কর্মচারীদের কাঠ চুরির সাথে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে বলেন, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণসহ বন বিভাগের লোকবলের অভাবে কাঠ চুরি প্রতিরোধে তারা হিমসিম খাচ্ছেন।