ঝিনাইদহে স্ত্রী পরকীয়ায় পুলিশের এসআই খুনের অভিযোগ, আদালতে মামলা দায়ের
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ-
দেশের অস্থির রাজনীতির কারণেই দিনের পর দিন থাকতে হয়েছে বাইরে। সময় দেয়া হয়ে ওঠেনি ঘরের স্ত্রীকে। এ কারণে দিন দিন দাম্পত্য জীবনে দেখা দিয়েছে ফাটল। আর এ সুযোগেই স্ত্রীর মন দখল করে নেয় নিকটাত্মীয় এক যুবক। অবশেষে সেই পরকীয়া প্রেমই কাল হয়ে দেখা দেয় এসআই আকরাম হোসেনের জীবনে। স্ত্রী বনানী বিনতে বশিরের পরকীয়ার জের ধরেই খুন হন পুলিশ কর্মকর্তা আকরাম। পরকীয়া প্রেমিকের সহযোগিতায় স্বামীকে লোকজন দিয়ে কুপিয়ে মারত্মক জখম করেন বনানী। গত ১৩ জানুয়ারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এসআই একরামের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ পরিবারের।পুলিশের এসআই আকরাম হোসেনের অপমৃত্যুর ৭ দিন পর তার বোন জান্নাত আরা ভাইকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ এনে ঝিনাইদহ আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। আদালত অভিযোগটি গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। মামলায় বাদী অভিযোগ করেছেন পরকিয়া প্রেমের কারণে তার ভাই আকরাম হোসেনের স্ত্রী বনানী বিনতে বশির, তার প্রেমিক সাদিমুল হক মুন ও বনানীর বাবা-মা চক্রান্ত করে এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছেন। তারা সন্ত্রাসীদের দিয়ে তার ভাইকে কুপিয়ে আহত করে পরে সড়ক দূর্ঘটনা বলে প্রচার করেছে।বাদি জান্নাত আরা জানান, তার পিতা ঝিনাইদহ শহরতলী হামদহ এলাকার আবুল হোসেন। তার ভাই ছিলেন পুলিশের এস আই আকরাম হোসেন। বিমানবন্দরের এসবি শাখায় কর্মরত ছিলেন। ২০০৬ সালে ১৩ জানুয়ারী তার ভাই আকরাম হোসেন উপজেলার ভগবাননগর এলাকার বশির উদ্দিনের মেয়ে বনানী বিনতে বশিরকে বিয়ে করেন। বিয়ের ২ বছর পর বনানীর কোল জুড়ে আসে একটি কন্যা সন্তান। যার নাম রাখা হয় আফরিন আকরাম। এই অবস্থায় তাদের সংসার চলছিল। চাকুরীর সুবাদে তার ভাই প্রায়ই বাইরে থাকতে হতো। আর এই সুযোগে বনানীর নিকট আত্মিয় মুন এর সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ নিয়ে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বচসা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে আকরাম হোসেন তার স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় চলে যান। যারা কারনে স্ত্রী বনানী ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। চক্রান্ত করেন হত্যার।এদিকে গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর রাত ১১ টার দিকে মোটর সাইকেল যোগে যমুনা সেতু হয়ে বাড়ি ফিরছিলেন এসআই আকরাম হোসেন। ফেরার পথে শৈলকুপার বড়দাহ নামক স্থানে একদল সন্ত্রাসী তাকে কুপিয়ে আহত করে। আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ঝিনাইদহে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে ১৩ জানুয়ারি তিনি মারা যান। পরে এটাকে সড়ক দূর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়া হয়। আর এই ষড়যন্ত্র করেন আকরাম হোসেনের স্ত্রী বনানী বিনতে বশির ও তার প্রেমিক মুন। এতে সহযোগিতা করেন বনানীর বাবা বশির উদ্দিন ও মা সেলিনা খাতুন। বাদি আরো উল্লেখ করেন বিষয়টি এলাকায় প্রকাশ হয়ে পড়লে বনানী তার কন্যাকে সাথে নিয়ে গা-ঢাকা দিয়েছেন। এখন তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।জান্নাত আরা জানান, ঘটনাটি জানার পর ২০ জানুয়ারি তিনি ঝিনাইদহ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৪ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। আদালত মামলাটি এজাহার হিসাবে গহন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। এ ব্যাপারে বনানী বিনতে বশিরের সাথে তার ০১৭৩৭-৯১৭২০৮ ও ০১৯৮৬-০৬৪৩৭৪ নাম্বরে কথা বলার চেষ্টা করে বন্ধ পাওয়া গেছে। ওই দুইটি নাম্বার তিনি ঢাকার শাহবাগ থানা থেকে লাশ হস্তান্তরের সময় আবেদনপত্রে উল্লেখ করেছিলেন।