অবশেষে খুলল সেই গেটের তালা
অবশেষে খুলল সেই গেটটি। ২৩ দিন আগে তালাবদ্ধ করা গেটটির তালা খোলা হলো। দীর্ঘ এ সময়ে তালাবদ্ধ গেটটির সামনে এসে দাঁড়িয়েছিলেন সাবেক এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু তাদের বেরুতে বা ঢুকতে দেয়া হয়নি।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সেই গেট খোলার অপেক্ষায় তালাটির সামনে দাঁড়িয়েছিলেন বেশ খানিকটা সময়। কিন্তু তাকেও পরোয়া করেনি ‘শক্তিশালী’ সেই তালা। তবে তালাটি অবশেষে খুলে গেল একটি মরদেহের কারণেই।
মঙ্গলবার মালয়েশিয়া থেকে নিয়ে আসা সেই মহদেহ এসে পৌঁছালো রাজধানীর গুলশানে, তালাবদ্ধ সেই গেটটির সামনে। তখন ঠিক দুপুর দেড়টা। মরদেহ গেটের সামনে আসতেই তালা খোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়লেন সবাই। অবশেষে তালাটি খুলে ভেতরে নিয়ে যাওয়া হলো মরদেহ।
এর আগে গেল ৫ জানুয়ারি ঘটনা। কার্যালয়টির ভেতরে তখন অবস্থান করছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। সেই কার্যালয় থেকে তিনি বের হয়ে আসবেন নয়াপল্টনের কার্যালয়ে। দুপুর সোয়া ১২টায় এ খবর পেয়ে নড়ে চড়ে উঠে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এক পর্যায়ে এক নারী পুলিশ অলক্ষ্যেই গেটে লাগিয়ে দিলেন সেই ‘শক্তিশালি’ তালা।
এর কয়েক ঘণ্টা পর বিকেলে ৩টা ৪৮ মিনিটে কার্যালয়টির দোতলা থেকে নিচে নেমে এলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। রাস্তায় বের হওয়ার জন্য উঠলেন গাড়িতে। তবে মূল ফটকে তালা দেখে গাড়িটি ১০ ফুটের মতো এগুনোর পর থেমে যায়। বাইরে থাকা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে এসময় মূল ফটকের তালা খুলে দিতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তারা তখন ছিলেন একদম নির্বিকার।
এ ঘটনার তিনদিন পর মূল ফটকে লাগানো সেই তালাটি অবশ্য খুলে ফেলা হয়। কিন্তু তখন সেই তালার নিয়ন্ত্রণ চলে যায় ওই কার্যালয়ের লোকজনের হাতে। গেল তিন সপ্তাহ ধরেই গেটটির ওপারে অবস্থান করছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
এর মধ্যে গত ২৪ জানুয়ারি দুপুরে খবর আসে মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত সাবেক সেই প্রধানমন্ত্রীর কনিষ্ঠ পুত্র হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। ছেলে হারানোর কষ্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নিজের ঘরের দরজা বন্ধ করে একান্তে অশ্রুপাত করতে থাকেন। ঠিক এ সময়েই খবর আসে, ছেলের মৃত্যুতে শোকে মুহ্যমান সেই মাকে সমবেদনা জানাতে সেই কার্যালয়ে আসছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে কার্যালয়ের আশেপাশে জোরদার করা হয় নিরাপত্তা। সবাই তখন আশায় বুক বাঁধেন। এবার হয়তো সাবেক ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী একসঙ্গে ক্যামেরাবন্দী হবেন।
২৪ জানুয়ারি রাত ৮টা ২৩ মিনিটে ওই গেটের সামনে এসে দাঁড়ান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। তিনি গাড়ি থেকে নেমে মূল গেটের সামনে গিয়ে দাঁড়ান। কিন্তু তার আগমনের আগেই মূল গেট তালাবদ্ধ হয়ে পড়ে। প্রধানমন্ত্রীর আগমনে তালা খোলার জন্য কেউ সেখানে এগিয়ে এলেন না। কিছুটা সময় সেখানে নির্বিকারভাবে অবস্থান করতে থাকেন দেশের সর্বোচ্চ সম্মানিত ও প্রভাবশালী ব্যক্তিটি। কিন্তু না অবশেষে খোলা হয়নি গেটটি।
তালাবদ্ধ গেটের ওপার থেকে জানানো হয়, শোকে বিহ্বল সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে। একথা জানতে পেরে প্রধানমন্ত্রী তার গাড়িবহর নিয়ে হতাশ হয়ে বন্ধ গেটের ওপার থেকেই ফিরে যান। এসময় গেটের ভেতরে দাঁড়ানো বেশ কয়েকজন হাততালি দিয়ে ‘আনন্দ’ প্রকাশ করেছিলেন।