ডুবোচরে আটকা অর্ধশতাধিক পণ্যবোঝাই জাহাজ
যমুনা নদীতে নাব্য সংকটের কারণে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা সার, কয়লা ও সিমেন্ট বোঝাই অর্ধশত কার্গো জাহাজ পাটুরিয়া ফেরিঘাটের অদূরে নগরবাড়ী রুটের মোল্লারচর ও ব্যাটারিরচর এলাকায় ডুবোচরে আটকা পড়েছে।
ডুবোচরে আটকেপড়া জাহাজগুলোর অধিকাংশই ইউরিয়া ও এমওপি সারবোঝাই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পাটুরিয়ার অদূরে বরুরিয়া এলাকায় পদ্মায় সারি সারি জাহাজ ডুবোচরে আটকে রয়েছে। জাহাজ চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ নদীর নাব্য না থাকায় বাধ্য হয়ে ওইসব কার্গো থেকে অন্য ট্রলারে সার আনলোড করে গন্তব্যে নিতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে ওই সব ট্রান্সপোর্ট কোম্পানিকে দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে।
মেসার্স প্রোটন ট্রেডার্সের প্রতিনিধি মো. জুয়েল শেখ ও মো. শাহীনুর ভূঁইয়া জানান, ওই কোম্পানির ১৮টি কার্গো জাহাজ নগরবাড়ী ও বাঘাবাড়ী যাওয়ার জন্য পাটুরিয়া ঘাটের কাছে বরুরিয়া এলাকায় নোঙর করে আছে। চট্টগ্রাম থেকে সারবোঝাই করে ছেড়ে আসার পর যমুনা নদীর মোল্লারচর ও ব্যাটারিরচর এলাকায় তাদের জাহাজগুলো আটকে যাচ্ছে। প্রায় ২০ দিন ধরে তারা পাটুরিয়ার অদূরে আটকা রয়েছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সিএমপি বিভাগ থেকে তাদের জানানো হয়েছে, পাটুরিয়া-নগরবাড়ী নৌপথে ৭ ফুট পানির গভীরতা রয়েছে। কিন্তু তাদের প্রতিটি জাহাজের গভীরতা কম করে হলেও ১১ ফুট। এ অবস্থায় তাদের প্রতিটি সারবোঝাই জাহাজ থেকে প্রায় ৭০ ভাগ মাল আনলোড করতে হচ্ছে।
তারা আরও জানান, এই আনলোড করতে তাদের বস্তাপ্রতি ১৫ টাকা করে খরচ হয়। এ ছাড়া চলমান অবরোধের কারণে বস্তা না আসায় তারা আনলোড করতে চরম ভোগান্তির মধ্যে রয়েছেন।
তিনি আরও জানান, নিয়ম অনুযায়ী কোনো জাহাজ থেকে যদি কেয়ারিং কোম্পানি একবারে ২২ দিনের মধ্যে মাল আনলোড না করতে পারে সেক্ষেত্রে দ্বিগুণ ভাড়া প্রদান করতে হচ্ছে জাহাজ কোম্পানিকে। চট্টগ্রাম থেকে একটি সারবোঝাই জাহাজ নগরবাড়ী কিংবা বাঘাবাড়ী পর্যন্ত ভাড়া প্রায় ৬ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) যুগ্ম-পরিচালক (নৌ-সংরক্ষণ বিভাগ) একেএম সাজাহান হোসেন জানান, শুষ্ক মৌসুমে নদীপথের গভীরতা এমনিতে কম। এ রুটে পানির সর্বনিম্ন গভীরতা সাত ফুট। কিন্তু ওই সব কার্গো জাহাজের গভীরতা ১০ ফুটেরও বেশি। এজন্য মালগুলো আনলোড নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে হচ্ছে।
টিএফ সেতু-২ জাহাজের মাস্টার সাইফুল ইসলাম জানান, ৬ জানুয়ারি থেকে পাটুরিয়া ঘাটের অদূরে বরুরিয়ায় আটকা রয়েছি।