নাতনি জাহিয়াকে নিয়ে খালেদার সময় পার
সাত বছর পর নাতনিকে পাশে নিয়ে ঘুমিয়েছেন পুত্রশোকে কাতর খালেদা জিয়া। ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর ছোট মেয়ে জাহিয়া রহমান। বাবাকে হারিয়ে দীর্ঘসময় পর দাদির সঙ্গে মঙ্গলবার রাত কাটান জাহিয়া।
আরাফাত রহমান কোকোর লাশ মঙ্গলবার মালয়েশিয়া থেকে দেশে আনা হয়। বাবার সঙ্গে আসেন জাহিয়া রহমান। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাবাকে বনানী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। এরপর থেকে নাতনিকে কাছছাড়া করছেন না দাদি খালেদা জিয়া। সারাক্ষণ দাদি কাঁদছিলেন, আর জাহিয়া নিজে দাদির চোখের জল টিসু দিয়ে মুছিয়ে দিচ্ছিলেন। ছেলের উষ্ণ পরশ পেতে নাতনিকে কাছছাড়া করছিলেন না খালেদা জিয়া।
চেয়ারপারসনের প্রেস উইং কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান দ্য রিপোর্টকে এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, রাতে দাদিকে জড়িয়ে ঘুমান নাতনি জাহিয়া। বুধবার সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর বাবার কবর জিয়ারত করতে বড় বোন জাফিয়া ও মা শামিলা রহমানের সঙ্গে জাহিয়া যান বনানী কবরস্থানে। জিয়ারত শেষে আবারও তারা গুলশান কার্যালয়ে ফিরে আসেন।
সাত বছর ধরে জাহিয়া বাবা-মায়ের সঙ্গে মালয়েশিয়ায় বসবাস করছেন। বাবাকে হারানোর পর তার দেশে ফেরা। বুধবার সারাদিন দাদির সঙ্গে থাকা ছাড়াও দুই বোন বিকেলে কার্যালয়ের নিচে নামেন। সেখানে বাবার জন্য রাখা শোক বইয়ের স্থানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। শোক বইয়ের সামনে বাবার রাখা ছবিটি দেখে অশ্রু সংবরণ করতে না পেরে একসময় প্রিয় বাবার আলোকচিত্রে চুমু খান মেয়ে জাহিয়া।
সন্ধ্যায় গুলশান কার্যালয়ে আসনে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরে স্ত্রী রাহাত আরা বেগম। তিনি খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন। চেয়ারপারসনের কক্ষে ঢুকেই জাহিয়াকে কাছে নিয়ে আদর করেন তিনি। জাহিয়াও সালাম দিয়ে রাহাত আরা বেগমের স্নেহের পরশ নেন। এরপর আবারও ফিরে যান দাদির কাছে।
রাহাত আরা দ্য রিপোর্টকে জানান, মঙ্গলবার ভিড়ের কারণে কার্যালয়ে এসে প্রবেশ করতে পারেননি। আটক স্বামী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কাকতালীয়ভাবে আরাফাত রহমান কোকোর কফিন দূর থেকে দেখেছেন। মির্জা আলমগীরকে একটি মাইক্রোবাসে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল কাশিমপুর কারাগারে। অন্যদিকে, বায়তুল মোকাররম মসজিদে জানাজার জন্য যাচ্ছিল কোকোর কফিন। কাওরান বাজারে সড়কের উল্টো পাশে মাইক্রোবাসে অবস্থান করে কোকোর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান তিনি।
এদিকে, আরাফাত রহমান কোকোর জন্য খোলা শোক বইতে বুধবার স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ, অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসের বখতিয়া, সাবেক কূটনীতিক খালেকুজ্জামান বীরউত্তম, এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সালাম মোশের্দীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি, কার্টুন এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিউল্লাহ চৌধুরী, বিকেএমইএ’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম আরাফাত রহমান, সাবেক ছাত্রনেতা সানাউল হক নীরু প্রমুখ।
চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, মোসাদ্দেক আলী ফালু, খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস ও বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি এস এম ফজলুল হক, চেয়ারপারসনের প্রেস উইং কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান, শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।