ঝিনাইদহ শহরে সাপের ভয় দেখিয়ে নারী সাপুড়েদের চাঁদাবাজি
জাহিদুর রহমান:-ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহে কেনাকাটা করার জন্য গ্রাম থেকে শহরে আসা কলেজ পড়–য়া যুবক আরিফ (২২) এমন বিব্রতকর পরিস্থিতির জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলেন না। ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্ত্বরে দাঁড়িয়ে অপো করছিলেন কিছু কেনা কাটার জন্য। ঘঁড়িতে তখন বিকেল তিনটা। দল বেধে চলা চার নারী ঘিরে ধরলো আরিফকে। ঝাপি থেকে সাপ বের করে বললো ‘টাকা দেন, নইলে সাপ বের করলাম’।
সাপের ঝাপি দেখে আরিফ ভীত হয়ে পকেট থেকে একশ টাকার একটি নোট বের করে তাদের বললেন দশ টাকা নিতে। কিন্তু তারা একশ টাকার নোট নিয়ে ফুট। আরিফ অবাক হয়ে চেয়ে রইলেন দ্রুত গতিতে চলা চার নারী সাপুড়ের দিকে।ঝিনাইদহ কেসি কলেজের সামনে মাজেদা, পারুল ও লোপা পড়ে যায় চার নারী সাপুড়ের খপ্পরে। তাদের ঘিরে ধরে প্রতি জনের কাছ থেকে ১০ টাকা করে ৩০ টাকা হাতিয়ে নেন তারা। এভাবে মঙ্গলবার বিকালে ঝিনাইদহ শহরের মডার্ণমোড় থেকে চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার পথে অন্তত শতাধিক যুবক ও কিশোরী তাদের খপ্পরে পড়েন। ঝিনাইদহ শহরের চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে সরকারি কেসি কলেজ মহিলা হোস্টেলের সামনে বোরকা পরিহিতা এক নারীর সামনে সাপ বের করে টাকা চাওয়া মাত্রই তিনি ভয়ে চিৎকার দেন। শহরের শামিমা কিনিকের সামনে সাজ্জাদ নামে এক স্কুল পড়ুয়া কিশোরকে নাজেহাল করার সময় এ সব নারী সাপুড়ের নাম পরিচয় জিজ্ঞাসা করা হলে মুখ ভেংচিয়ে তারা বলেন, উহ! পেপারে দিবা নাকি?অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঝিনাইদহ শহরের ধোপাঘাটা ব্রিজের পাশে তাবু খাটিয়ে প্রায় ২/৩ বছর কয়েকটি পরিবার বসবাস করছেন। যাযাবর হিসেবে পরিচিত এসব পরিবার। পরিবারের কোনো আয় নেই। পুরুষ সদস্যরা সন্তান নিয়ে তাবুতেই থাকেন। আর সকাল-সন্ধ্যা শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত সাপের ঝাপি নিয়ে টাকার জন্য দলবেঁধে বেড়ান নারীরা। টাকা উপার্জনের জন্য অভিনব সব পন্থা ওদের। কখনো স্বজনদের দাফন কাফন, আবার কখনো বোনের বিয়ের জন্য টাকা তুলে বেড়ান। তবে এসব পন্থা কেবল বাহানা মাত্র। ঝিনাইদহ শহরের দোকানদার মানিক হোসেন জানান, প্রতিদিন এদের দৌরাত্মে মানুষ অতিষ্ঠ। একজনকে টাকা দিলে সঙ্গে থাকা আরো ৪/৫ জনকে টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে সাপ বের করে ভয় দেখায়।