ক্রসফায়ারের নামে মানুষ হত্যা বন্ধের আহ্বান জামায়াতের
ক্রসফায়ারের নামে পরিকল্পিতভাবে মানুষ হত্যা ও দেশব্যাপী ‘সরকারের সৃষ্ট’ সন্ত্রাস, নৈরাজ্য বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান এক বিবৃতিতে রবিবার রাতে এ আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘সরকার পরিকল্পিতভাবে জামায়াত ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাদের ধরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ্যাডভোকেট ইমরুল কায়েস, আসাদুল্লাহ তুহিন, সাকিবুল ইসলাম, অধ্যাপক নূরুল ইসলাম শাহিনকে হত্যা করার পর এবার অত্যন্ত নির্দয় এবং নিষ্ঠুরভাবে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মী এমদাদুল্লাহকে হত্যা করেছে। একই কায়দায় হত্যার পর বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার সাজানো গল্প প্রচার করে নিষ্ঠুরতার এক নির্মম নজির স্থাপন করেছে।’
বিবৃতিতে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, সরকার বেছে বেছে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নেতাদের গ্রেফতারের পর হত্যা করে দেশকে নেতৃত্বশূন্য করতে চায় এবং বিরোধী রাজনীতিকে নির্মূল করতে চায়। রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সরাসরি গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়ার কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রতিটি হত্যার দায়ভার অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে। আমরা সুষ্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিতে চাই, জনগণকে জিম্মি করে রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দলীয় ক্যাডারের মত ব্যবহার করে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদেরকে গুলি করে হত্যা করার পরিণতি হবে অত্যন্ত ভয়াবহ। জনগণ আজ জেগে উঠেছে। জনতার বাঁধ ভাঙা জোয়ার শেখ হাসিনার ক্ষমতার মসনদকে ভেঙে চুরমার করে দেবে।
হত্যাকাণ্ড বন্ধ এবং সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পথ পরিহার করে শান্তির পথে ফিরে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, রবিবার রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল বাসেত মারজানকে ঢাকা থেকে, কুমিল্লা জেলার বুড়িরচং উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সাইফুল আলম, রাজশাহী মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর আবুল কালাম আজাদের ছেলে মো. মেহেদি এবং বাগেরহাট জেলার জামায়াতের মহিলা কর্মী আসিয়া বেগমকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেফতার করেছে। এর আগে রংপুরের মিঠাপুকুর থেকে জামায়াত নেতা আল আমীন, তার স্ত্রী বিউটি বেগম ও প্রতিবেশী মৌসুমীকে গ্রেফতার করার প্রায় ২০ দিন অতিবাহিত হচ্ছে। অথচ তাদের কাউকে আদালতে সোপর্দ করা হয়নি বা তাদের পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়নি। ফলে তার পরিবার-পরিজন ও আত্মীয়-স্বজনের মাঝে গভীর উদ্বেগ বিরাজ করছে। গ্রেফতার করে থানায় নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গ্রেফতারকৃতদের পরিবারের সদস্যগণ হত্যার আশঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
ডা. শফিকুর আরও বলেন, জোর করে ক্ষমতা দখলকারী অবৈধ আওয়ামী সরকার ভেবেছে হত্যা করেই ক্ষমতায় থাকা যাবে। এটা তাদের ভুল ধারণা। তাদের পতন সময়ের ব্যাপার মাত্র। ২০ দলীয় জোট ঘোষিত দেশব্যাপী অবরোধ কর্মসূচির পাশাপাশি বুধবার পর্যন্ত টানা ৭২ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন অব্যাহত রেখে সরকার পতনের আন্দোলন চূড়ান্ত লক্ষ্যে এগিয়ে নেওয়ার জন্য তিনি দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।