নওগাঁয় নিপাহ ভাইরাসে ৩ জনের মৃত্যু
জেলার মান্দা উপজেলার ভালাইন ও বালু বাজার গ্রামে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক সপ্তাহে তিনজন মারা গেছেন। নওগাঁর সিভিল সার্জন মোজাহার হোসেন সোমবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মৃতরা হলেন— ভালাইন গ্রামের বাসিন্দা মোখলেছুরের ছেলে আপেল মাহমুদ (১১), কাশেম আলীর ছেলে কাউসার আলী (১৩) ও বালু বাজার গ্রামের আলিমুদ্দিনের ছেলে হাফিজুল ইসলাম (২৫)। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রমেক) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান।
সিভিল সার্জন মোজাহার হোসেন জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের রবিবার পাঠানো এক ফ্যাক্স বার্তার মাধ্যমে তাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এটি জানার পর ভালাইন ও বালু বাজার গ্রামের অন্তত ৩৯ নারী-পুরুষ ও শিশুকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘খেজুরের কাঁচা রস ও বাদুড়ে খাওয়া বরই খেয়ে অসুস্থ হয়ে ১৭ জানুয়ারি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন হাফিজুল ইসলাম। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২২ জানুয়ারি তিনি মারা যান। এ ছাড়া ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একই দিন মারা যান আপেল। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ১১ জানুয়ারি। ২৪ জানুয়ারি ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩০ জানুয়ারি মারা যান কাউসার আলী।’
বার্তায় আরও জানানো হয়েছে, ‘মৃত ব্যক্তিদের লালা, রক্ত ও অন্যান্য আলামত পরীক্ষার জন্য ঢাকার রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ আলামত পরীক্ষা করে নিপাহ ভাইরাসের জীবাণু পেয়ে স্বাস্থ্য বিভাগকে তা নিশ্চিত করে।’
এদিকে, ওই ঘটনার পর জেলার স্বাস্থ্য বিভাগে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। রবিবার বিকেলেই ভালাইন ও বালুবাজার গ্রাম পরিদর্শন করেন জেলার সিভিল সার্জন ডা. মোজাহার হোসেনসহ কয়েক চিকিৎসক।
একই সঙ্গে স্থানীয় স্বাস্থ্য পরিদর্শক ফয়েজ উদ্দিন ও স্বাস্থ্য সহকারী তাইজুল ইসলামকে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সিভিল সার্জন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মোজাহার হোসেন আরও জানান, এ ঘটনায় নওগাঁ সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার জাহিদ নজরুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। মৃতদের সংস্পর্শে থাকা ৩৯ জনকে শনাক্ত করে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
বিষয়টি ভালভাবে পর্যবেক্ষণ এবং নিপাহ ভাইরাস নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ঢাকা থেকে শিগগিরই ভালাইন ও বালু বাজার গ্রামে ছয় সদস্যের একটি চিকিৎসক দল পরিদর্শন করবেন। এ দলে থাকবেন ঢাকার স্বাস্থ্য অধিদফতর, রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং কলেরা হাসপাতালের (আইসিডিডিআরবি) প্রতিনিধিরা। সিভিল সার্জন এ তথ্য জানান।