বুধবারের এসএসসি পরীক্ষা শনিবার
হরতালের সময় বাড়ানোর কারণে বুধবারের এসএসসি পরীক্ষাও পেছাল। বুধবারের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে শনিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত।
সচিবালয়ে জরুরী এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ পরীক্ষা পরিবর্তনের কথা জানান।
এসএসসিতে বুধবার বাংলা (আবশ্যিক) দ্বিতীয় পত্র, সহজ বাংলা দ্বিতীয় পত্র, বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি দ্বিতীয় পত্র, দাখিলে হাদিস শরীফ এবং কারিগরীতে ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল।
গত সোমবার এসএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ২০ দলীয় জোটের হরতালের কারণে তা পেছান হয়। পরিবর্তিত সময়সূচি অনুযায়ী, সোমবারের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে শুক্রবার (৬ ফেব্রুয়ারি)।
ওই দিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট অনির্দিষ্টকালের অবরোধের মধ্যে রবিবার (১ ফেব্রুয়ারি) থেকে ৭২ ঘণ্টার হরতাল ডাকে। মঙ্গলবার বিকেলে হরতালের সময় আরও ৩৬ ঘণ্টা বাড়ান হয়।
এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১৪ লাখ ৭৯ হাজার ২৬৬ জন শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে ৭ লাখ ৬৩ হাজার ৩৩৯ জন ছাত্র এবং ৭ লাখ ১৫ হাজার ৯২৭ জন ছাত্রী।
পরীক্ষা আবারও পেছানোর কারণে সারা দেশের ১৪ লাখ ৭৯ হাজার পরীক্ষার্থীসহ, অভিভাবক, শিক্ষকদের উৎকণ্ঠা দীর্ঘায়িত হল।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আবেদন জানিয়েছিলাম অন্তত পরীক্ষার দিনগুলোতে হরতাল না দেওয়ার জন্য। কিন্তু তারা (বিএনপি জোট) সাড়া দেননি। এটা জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক। এ বিষয়ে আর বলার কিছু নেই।
তিনি বলেন, পরীক্ষা দিতে না পারা, পিছিয়ে দেওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের মন-মানসিকতা, চিন্তার ওপর যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে তা জাতিকে বহু বছর পিছিয়ে দেবে। দুশ্চিন্তা, অনিশ্চয়তার কারণে ছাত্রছাত্রীদের আত্মবিশ্বাসে আঘাত পড়বে।
আন্দোলনকারী দলগুলোর প্রতি আবেদন-নিবেদনের জায়গা থেকে সরে আসেননি জানিয়ে নাহিদ বলেন, কোনো দলের হিসেবে কাউকে বলছি না। সকল রাজনৈতিক দলের, দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কাজ হল আগামী প্রজন্মকে এগিয়ে নেওয়া। আশা করি, তারা কর্মসূচি আর বাড়াবেন না।
আগামী রবিবার থেকে পূর্বনির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যুদ্ধে যাচ্ছি না। সকলের সহযোগিতায় আমাদের ছেলেমেয়েরা পরীক্ষা দিক এটা আমরা চাই। তাই সকলের সহযোগিতা নিয়েই চলব। আমি মাননীয় খালেদা জিয়াসহ ২০ দলের সকলের সহযোগিতা চাই। তিনি ইনস্ট্রাকশন দেবেন ছেলেমেয়েরা যাতে ভালভাবে পরীক্ষা দিতে পারে। যে যেখানে আছো আমার দলের বা ফ্রন্টের সহযোগিতা কর। এটাই স্বাভাবিক, এটাই মানবিক। রাজনৈতিক জীবনে এটাই আমার শিক্ষা।’
“আমি দুঃখিত যে, বিএনপি চেয়ারপারসনের ছেলে মারা গেছেন। সবার জন্যই এটা দুঃখের ব্যাপার। আমরা সবাই মর্মাহত। দেশে লাশ নিয়ে আসা হয়েছে। তার (কোকো) ছেলেমেয়েরা পরীক্ষা দিতে ওখানে (মালয়েশিয়া) চলে গেছে। আমি খুব খুশি হয়েছি, তারা পরীক্ষা দিক। এখানে ‘এ’ ও ‘ও’ লেভেল পরীক্ষার সুযোগও তারা করে দিয়েছিল, যদিও সবাই পরীক্ষা দিতে পারেনি। অন্যকে সুযোগ করে দেওয়ার জন্য মনে যদি এই জাগরণটা আসে তবে আশা করি, আমাদের ১৫ লাখ পরীক্ষার্থীর জন্যও এই চিন্তাটা আসতে পারে। এই আশায়ই আমরা তাদের কাছে আবেদন জানাচ্ছি” বলেন নুরুল ইসলাম নাহিদ।
এ সময় শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবু বক্কর ছিদ্দিক উপস্থিত ছিলেন।