বাণিজ্য মেলার শিশু পার্কে শিশু নেই
‘দেখতেইতো পারছেন। শিশু নেই, শিশুর মা বাবা আর আত্মীয় স্বজনও নেই। পার্ক চলবে কি করে? ইচ্ছে করে সব ছেড়ে চলে যাই। কিন্তু উপায় নেই। চলে গেলে মালামালগুলো আর পাবো না। কোম্পানিটাও ব্লাক লিস্টেড হয়ে যাবে।’
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার দুইটি শিশু পার্কের মালিক তারিখ হোসেন কাজল বুধবার বিকেলে এ সব কথা বলেন।
কাজল বলেন, ‘শিশু ও দর্শকের অভাবে ১০ দিন হয়েছে পার্কের যাদুর খেলা বন্ধ করে দিয়েছি। ইচ্ছে থাকলেও একই কারণে মেলার শুরুতেই পার্কের প্রবেশের জন্য টিকেট ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে পারিনি। পার্কে প্রবেশের জন্য মাথাপ্রতি ১০ টাকা টিকেটের ব্যবস্থা করার চিন্তা ছিল। সে মোতাবেক সাড়ে ৬ লাখ টাকা খরচ করে পার্ক দুটির খোলা জায়গার চারিদিকে ঘেরা দিয়ে দৃষ্টি নন্দন গেইটও বানিয়ে ছিলাম। পার্ক দুইটিতে ঢোকার জন্য লাখ টাকা খরচ করে টিকেটও ছাপিয়ে ছিলাম। কিন্তু শিশু এবং দর্শনার্থীর অভাবে মেলার শুরু থেকেই সে প্রথা আর চালু করা হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘৩২ লাখ টাকা আগামসহ ৫১ লাখ টাকা খরচ করে মেলায় এই পার্ক দু’টি নিয়ে বসেছিলাম। শিশু পার্ক-১ এর খোলা জায়গার জন্য ১৭ লাখ টাকা এবং শিশু পার্ক-২ এর জায়গার জন্য নগদ সাড়ে ১৫ লাখ টাকা ইপিবিকে দিয়েছি। বাকি টাকা পার্কের ডিজাইন, সাজসজ্জা ও টয় ট্রেন, থ্রি-ডি মুভি, ইচ্ছে করে নাগিনী, মৃত্যুকূপ, নাগর দোলা, জাম্পিং এবং যাদু প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন খেলার ব্যবস্থা করতে খরচ হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘পার্ক দু’টির জন্য ইনভেস্ট করা এই টাকার মধ্যে এ পর্যন্ত মাত্র ২৩ লাখ টাকা ঘরে তুলতে পেরেছি। বাকি টাকার কোনো খবর নেই। এ টাকা তোলার আর কোনো উপায়ও নেই।
কাজল বলেন, ‘এবারই প্রথম আমি এই মেলায় পার্ক দু’টি নিয়েছি। আমার মালিকানাধীন মেসার্স অন্তরা ট্রেডার্সের নামে ১৭ লাখ টাকা দিয়ে মেলার শিশু পার্ক-১ এর খোলা জায়গা এবং সাড়ে ১৫ লাখ টাকা দিয়ে মেলার শিশু পার্ক- ২ এর খোলা জায়গা বরাদ্দ নিয়েছি।’
কাজল বলেন, ‘ইপিবি ৫ দিনের ভাড়ার বিনিময়ে মেলার সময় ১০ দিন বাড়িয়েছে। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। বাড়তি এই ৫ দিন সময়ের জন্য পার্ক-১ এর জন্য ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও পার্ক-২ এর জন্য ২ লাখ ৩২ হাজার টাকা ইপিবিকে দিতে হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার ইপিবি’র লোকেরা ওই টাকা আদায়ের জন্য পার্কে এসেছিলেন। তারা টাকার জন্য পার্কের খেলা বন্ধ করে দিতে চেয়েছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘হরতাল অবরোধের কারণেই আজ আমাদেরকে এই অবস্থার মুখে পড়তে হয়েছে। এবারের মেলা থেকে কেউ পুঁজি নিয়ে ফিরতে পারবে না।’