নভোথিয়েটার দুর্নীতির ৩ মামলা: শেখ হাসিনাসহ ২৭ আসামীকে অব্যাহতি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৭ আসামীকে নভোথিয়েটার দুর্নীতির তিনটি মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ইমরুল কায়েস বৃহস্পতিবার এ অব্যাহতি দেন।
এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক মো. মঞ্জুর মোর্শেদ তাদের বিরুদ্ধে মামলাগুলোর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার দায় থেকে অব্যাহতির আবেদন করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত চূড়ান্ত প্রতিবেদনের শুনানী শেষে তাদের অব্যাহতি দেন।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয় থেকে গত সপ্তাহে এ সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়। দুদকের উপ-পরিচালক মো. মঞ্জুর মোর্শেদ মামলাগুলোর তদন্ত করে নিম্ন আদালতের জেনারেল রেকর্ডিং শাখায় ওই প্রতিবেদন দাখিল করেন। অভিযোগ ভিত্তিহীন হওয়ায় মামলার তদন্তে অভিযুক্তদের দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। দুদক সূত্র দ্য রিপোর্টকে এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
দুদকের উপ-পরিচালক মো. মঞ্জুর মোর্শেদ জানান, ‘২০০২ সালে রাজনৈতিক উদ্দেশে দুর্নীতি দমন ব্যুরো মামলাগুলো করেছিল। গত সপ্তাহে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়েছে। মামলার তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি কমিশন থেকে নিয়মানুযায়ী আদালতে পাঠানো হয়েছে।’
দুদক সূত্র জানায়, ২০০২ সালের ২৭ মার্চ বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্ট একনেক সদস্যদের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় তিনটি মামলা করে তৎকালীন (বর্তমানে বিলুপ্ত) দুর্নীতি দমন ব্যুরো।
তৎকালীন ব্যুরোর পরিদর্শক মোহাম্মদ ইব্রাহিম বাদী হয়ে একটি ও এ্যান্টিকরাপশন অফিসার (এসিও) খান মো. মিজানুল ইসলাম বাদী হয়ে দুটি মামলা করেন। তিনটি মামলায়ই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামী করা হয়। মামলাগুলোতে যথাক্রমে ৭ জন, ৮ জন এবং ১২ জনকে আসামী করা হয়।
আসামীদের মধ্যে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া ও শিক্ষামন্ত্রী এ এস এইচ কে সাদেক মারা গেছেন।
অন্যদের মধ্যে তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী ও ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর উচ্চ আদালত থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন বলে জানা গেছে।
সূত্র আরও জানায়, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা আলোচিত মামলাগুলো ১৩ বছর ধরে দুদকের অনিষ্পন্ন শাখায় পড়েছিল। দুর্নীতি দমন ব্যুরো থেকে দুর্নীতি দমন কমিশন রূপান্তর হওয়ার পর ২০০৫ সালের ২৪ আগস্ট বিচারপতি সুলতান হোসেন খানের কমিশন মামলাগুলোর গুরুত্ব বিবেচনা করে অভিযোগপত্র দাখিলের নির্দেশ দেয়।
বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে শেখ হাসিনা পৃথক দুটি রিট (নং-৭৯৬৬/০৫ ও ৭৯৬৭/০৫) করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ২০১০ সালের ৪ মার্চ চার্জশিট দাখিলের আদেশ অবৈধ ঘোষণা করেন।
এ সময় মামলা সম্পর্কে আদালত বলেন, নভোথিয়েটার দুর্নীতি মামলা শেখ হাসিনাকে হয়রানি ও হেয় প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যেই করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার নিয়ে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের কার্যনির্বাহী পরিষদের সিদ্ধান্তকে আমলে নিয়ে মামলাগুলো করা হয়। সিদ্ধান্তগুলো ছিল— প্রকল্পের পরামর্শকের ব্যয় বৃদ্ধি, ভবন নির্মাণের ব্যয় বৃদ্ধি ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যয় বৃদ্ধি।