নড়িয়ায় আ’লীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৫
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নড়িয়ায় বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় ৫ জন গুলিবিদ্ধসহ প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন।সংঘর্ষ চলাকালে দুই শতাধিক ককটেলের বিস্ফোরণ, গুলিবিনিময়, বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ১৭টি তাজা ককটেল ও দুটি রামদা উদ্ধার করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ আলম চৌকিদারের নেতৃত্বে দুপুরে নড়িয়া উপজেলা পরিষদের সামনে থেকে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি নড়িয়া উপজেলা সদরের প্রধান সড়ক হয়ে নড়িয়া বাজারের পশ্চিম মোড়ে পৌঁছলে পেছন থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বাদশা শেখের সমর্থকরা মিছিলে হামলা চালায়। এ সময় উভয়গ্রুপ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। উভয় গ্রুপের সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ঢাল-সড়কি, রামদা, ছেনদা ককটেলসহ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষ চলতে থাকে। এ সময় উভয় গ্রুপ দুই শতাধিক ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এ ছাড়া ২০ রাউন্ড গুলিবিনিময়ও হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১০৯ রাউন্ড শটগানের ফাঁকা গুলি ছোড়ে। সংঘর্ষে ইউনুস শেখ, আফজাল হোসেন বেপারি, জলিল শেখ, শুকুর মোল্যা ও আ. রব গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ ছাড়া মোজাম্মেল হোসেন, ইয়াছিন বেপারি, আ. মজিদ ঢালি, আ. হক শিকারী, ইউসুফ বেপারি, কামাল হোসেন, পুলিশের সদস্য সাদ্দাম হোসেন ও শিমুলসহ প্রায় ৩০ জন আহত হন। আহতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
সংঘর্ষ চলাকালে প্রতিপক্ষের সমর্থকরা বাদশা শেখের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ১৭টি তাজা ককটেল ও দুটি ধারালো ছেনদা উদ্ধার করেছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ইউনুস শেখ, মোজাম্মেল হোসেন, ইয়াছিন বেপারি, আ. মজিদ ঢালি, আ. হক শিকারীকে আটক করেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নড়িয়া বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে শাহ আলম চৌকিদার বলেন, ‘আমরা সহিংসতার বিরুদ্ধে নড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ইসমাইল ভাইয়ের নেতৃত্বে একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল বের করি। মিছিলে বাদশা শেখের নেতৃতে হামলা চালানো হয়। এ সময় সংঘর্ষ বাধে। এতে আমাদের ৫-৬ জন কর্মী গুলিবিদ্ধ ও বোমায় আহত হন।’
নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি বাদশা শেখ বলেন, ‘শাহ আলম চৌকিদারের নেতৃত্বে একটি মিছিল নিয়ে এসে আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসায় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। এ সময় আমার ছেলে ইউনুস শেখকে গুলি করে ও কুপিয়ে আহত করা হয়। ছেলেকে রক্ষা করতে গেলে পুলিশ আমাকে মারধর করেছে।’
এ ব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার তানভির হায়দার শাওন বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ ১০৯ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। ঘটনাস্থল থেকে ১৭টি ককটেল উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে বলেও জানান তিনি।