যে ৬টি আইনের ধারায় দণ্ডিত হবেন পেট্রোল বোমা নিক্ষেপকারীরা
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের চলমান অবরোধ-হরতালে গত এক মাসে প্রতিদিনই পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটছে। দেশে জননিরাপত্তা বা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন এবং জনসাধাণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির লক্ষ্যে যানবাহনে পেট্রোল/অকটেন/গানপাউডার ইত্যাদি দাহ্য পদার্থ নিক্ষেপের মাধ্যমে জানমালের ক্ষতি সাধন করা সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯ অনুসারে কঠোর শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এছাড়াও উপরোক্ত সন্ত্রাসী কার্যক্রমে কতিপয় ব্যক্তি ও সংগঠন প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে অর্থায়ন/প্রচার/উস্কানি দিয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে সহযোগিতা করছেন, যা সন্ত্রাস বিরোধী আইনে কঠোর শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
বৃহস্পতিবার সরকারি এক বিজ্ঞাপ্তিতে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়- সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯ অনুসারে
ক) কোন ব্যক্তি পেট্রোল বা অন্য কোন দাহ্য পদার্থ বা কোনো অস্ত্র সন্ত্রাসী কার্যে ব্যবহার করলে বা এ উদ্দেশ্যে নিজ দখলে রাখলে ইহার শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদ- ও তদুপরি অর্থদ- [ধারা-৬ (২) (উ)]
খ) কোন ব্যক্তি পেট্রোল বা অন্য কোনো দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করে কোনো ব্যক্তিকে পুড়িয়ে হত্যা অথবা গুরুতর জখম করলে বা চেষ্টা করলে ইহার শাস্তি মৃত্যূদণ্ড ও তদুপরি অর্থদণ্ড [ধারা-৬ (২) (অ)]।
গ) কোনো ব্যক্তি পেট্রোল বা অন্য কোনো দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করে কোনো ব্যক্তিকে পুড়িয়ে হত্যা অথবা গুরুতর জখম করার ষড়যন্ত্র বা সহায়তা বা প্ররোচিত করলে ইহার শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও তদুপরি অর্থদণ্ড [ধারা-৬ (২) (আ)]।
ঘ) কোন ব্যক্তি বা সংগঠন উক্তরূপ সন্ত্রাসী কার্যে আর্থিকভাবে সহায়তা করলে ইহার শাস্তি ২০ বৎসরের কারাদ- ও তদুপরি অর্থদণ্ড [ধারা-৭ (৩) (৪)]।
ঙ) কোনো ব্যক্তি বা সংগঠন পেট্রোল বোমা বহনকারী বা প্রস্তুতকারী বা প্রয়োগকারী কোনো অপরাধীকে আশ্রয় প্রদান করলে ইহার শাস্তি ৫ বৎসরের কারাদণ্ড ও তদুপরি অর্থদণ্ড [ধারা-১৪ (১) (ক)]।
চ) পেট্রোল বোমা বা কোনো দাহ্য পদার্থ দ্বারা মানুষ পুড়িয়ে হত্যা বা যানবাহনে অগ্নিসংযোগকারী কোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রমে উস্কানিমূলক সহায়তা প্রদানের নিমিত্ত যদি কোনো ইলেক্ট্রনিক বা প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচার করেন তাহলে ইহার শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও তদুপরি অর্থদণ্ড [ধারা-১৩]।
প্রসঙ্গত, গত এক মাসে ধরে চলমান অবরোধ-হরতালে রাজধানী ঢাকায় ২২৭টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে প্রায় সাড়ে ১১ শ’ ব্যক্তিকে। এর মধ্যে বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ কয়েক রাজনীতিকও রয়েছেন।
অন্যদিকে গত এক মাসে খোদ রাজধানী ঢাকাতেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন ৭ জন। এর মধ্যে পাঁচজনই বিরোধী জোটের নেতাকর্মী। বাকি দুজনকে দুষ্কৃতকারী বলে দাবি করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে। গত এক মাসে রাজধানী ঢাকায় ১১টি গাড়ি ভাঙচুর ও ১৫৩টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এসব ঘটনায় ৩৬ পুলিশ সদস্য ও দুজন আনসার সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন।