যশোরে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ জামায়াতকর্মী নিহত
যশোরে পুলিশের কাছ থেকে ‘পালিয়ে যাওয়া’ জামায়াতকর্মীর লাশ উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের দাবি- ওই জামায়াতকর্মী বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া এক ছাত্রদল নেতাকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সাতক্ষীরা সদর হাসপালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহত শহিদুল ইসলাম জামায়াতে ইসলামী সাতক্ষীরা জেলা আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবদুল খালেকের ভাগ্নে। সাবেক এই শিবির নেতা সরকারবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে সামনের কাতারে থাকতেন।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক জানান, বৃহস্পতিবার রাত পৌনে দুইটার দিকে যশোর-খুলনা মহাসড়কের ক্ষণিকা পিকনিক স্পটের সামনে একটি সাদা মাইক্রোবাসকে চ্যালেঞ্জ করে পুলিশ। এ সময় মাইক্রো আরোহীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ও বোমা ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে একজন আহত হন। অন্যরা পালিয়ে যায়। আহত ব্যক্তিকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আসামী পালানোর ঘটনায় কোতয়ালী থানায় দায়ের করা মামলার বাদী শার্শা থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সোমেন বিশ্বাস শুক্রবার সকালে শহিদুলের লাশ শনাক্ত করেন।
পুলিশ জানায়, শার্শা থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোর আনার পথে পুলিশ হেফাজত থেকে শহিদুল ইসলাম ও আবদুল মজিদ নামে দুই আসামী পালিয়ে যান। ‘পালিয়ে যাওয়া’ শহিদুল ইসলাম জামায়াতকর্মী এবং আবদুল মজিদ সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌর ছাত্রদল সভাপতি। এরা সাতক্ষীরা সদর ও কলারোয়া থানায় একাধিক মামলার আসামি।
আসামী পালানোর ঘটনায় কর্তব্যে অবহেলার দায়ে তিন পুলিশকে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার রাতে জানিয়েছিলেন যশোরের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান।
কথিত পলাতক আবদুল মজিদের ভগ্নিপতি আবুল কালাম আজাদ ইকতিয়ার ওই রাতে বলেন, ‘শার্শা থানা থেকে একটি মাহেন্দ্র গাড়িতে তুলে নেওয়া হয় দুজনকে। পুলিশসহ মাহেন্দ্রটি যশোর শহরের শেষ মাথায় আসা পর্যন্ত আমি মোটরসাইকেলে পেছন পেছন এসেছি। এরপর গাড়ির ভিড়ে আমি পেছনে পড়ে যাই। পরে থানায় এসে খোঁজ নিতে গেলে আমাকে জানানো হয়, আবদুল মজিদ ও শহিদুল ইসলাম পালিয়ে গেছে। বলা হয়, গাজীর দরগাহ ও নতুনহাটের মাঝামাঝি স্থান থেকে তারা পালিয়েছে। কিন্তু আমি জানি, তারা পালায়নি।’
নিহত শহিদুল ইসলাম সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের নূর আলী সানার ছেলে।
জামায়াতে ইসলামী যশোর জেলা কমিটির প্রচার সেক্রেটারি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন দলের সাতক্ষীরার নেতাদের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, নিহত শহিদুল ইসলাম সাবেক সংসদ সদস্য ও সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ আবদুল খালেকের ভাগ্নে। সাবেক এই শিবির নেতা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জামায়াতের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন। কোনো পদ না থাকলেও সরকারবিরোধী আন্দোলনে তিনি সামনের কাতারে থাকতেন।
এদিকে, কলারোয়া পৌর ছাত্রদল সভাপতি আবদুল মজিদকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মারুফ হাসান।