ক্ষমতার পটপরিবর্তন হলে বন্দুকবাজির বিচার করা হবে : বিএনপি
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দলবাজ কর্মকর্তারা বন্দুকযুদ্ধের নামে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হত্যা করছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ হুঁশিয়ার করে বলেছেন, ক্ষমতার পটপরিবর্তন হলে এসব বন্দুকবাজির বিচার করা হবে।
রবিবার বিকালে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলের অনির্দিষ্টকালের অবরোধ ও ৭২ ঘণ্টার হরতালের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে গত ৩ জানুয়ারি থেকে সারা দেশে অবরোধ পালন করছে ২০ দল।
সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগ সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানকে আওয়ামী লীগের দলীয় ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্রে পরিণত করেছে। চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বাকশাল কায়েম করেও তারা একই কর্ম করেছিল। তারা বিরোধী দল নিশ্চিহ্ন করে একদলীয় রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম করবে। মূলত একদলীয় শাসন ও রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করাই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মেনিফেস্টো।
চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০ দলকে ক্ষমতায় নেওয়ার জন্য নয়, আওয়ামী একনায়কতান্ত্র ও স্বৈরতন্ত্র থেকে জাতিকে মুক্ত করার জন্যই জনগণের এই আন্দোলন।
‘ঢাকার বাইরের সার্বিক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক’ অর্থমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে সালাহ উদ্দিন বলেন, এটি তার রাবিশ বক্তব্য নয় বলে আমি মনে করি। আমরা তার অবৈধ সরকারকে বলব, সময় থাকতে পতনের পদধ্বনি শুনুন; দ্রুত পদত্যাগ করে দেশ বাঁচান, মানুষ বাঁচান।
এফবিসিসিআইয়ের ‘দলবাজ সভাপতি’র কারণে ব্যবসায়ী সমাজের বক্তব্য সরকারের কানে যাচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব। দেশে স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকারকে দ্রুত পদত্যাগের পরামর্শ দেয়ার জন্য ব্যবসায়ী নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে সত্যিকারের জনপ্রতিনিধিত্বশীল সংসদ ও সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে ব্যবসাবান্ধব স্থিতিশীল পরিবেশ নিশ্চিত হবে।
একই সঙ্গে তিনি সব পরীক্ষার্থী, অভিভাবক, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, পেশাজীবী, বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজসহ সব শ্রেণী-পেশার মানুষকে সম্মিলিতভাবে চলমান আন্দোলন শরিক হওয়ার আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে সালাহ উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর হুকুমে সারা দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মহোৎসব চলছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা প্রতিবাদী মিছিলে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে। খুন, গুম, অপহরণ, হামলা-মামলার শিকার হচ্ছে রাজপথের আন্দোলনকারীরা । প্রতিনিয়ত বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী ও নিরীহ সাধারণ জনগণ গণগ্রেফতারের শিকার হচ্ছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাজধানীতে শনিবার মিছিল থেকে চার শিবিরকর্মীকে আটক করলেও স্বীকার করছে না এমন অভিযোগ করে বিবৃতিতে বলা হয়, চার শিবিরকর্মীর মধ্যে জসিমকে আজ ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছে। এর নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ক্ষমতার পটপরিবর্তন হলে এসব হত্যাকাণ্ডের ও নির্মম বন্দুকবাজির প্রতিটি ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিচার করা হবে।
বেগম খালেদা জিয়াকে সব যোগাযোগ-ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন রেখে অঘোষিতভাবে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন সালাহ উদ্দিন।