‘ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন ধূলিস্যাৎ হয়ে যাবে’
বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতা হারানোর আশঙ্কায় উন্মাদ হয়েছেন। উচ্চ আদালত কর্তৃক wrong headed উপাধিপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা অন্যকে উন্মাদ অভিহিত করা রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত ও পাগলের আপন প্রলাপ বলে জাতি মনে করে।
তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক সংকটের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতির দায় সম্পূর্ণভাবে অবৈধ ক্ষমতাসীনদেরকেই নিতে হবে। ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে জবরদস্তি ক্ষমতায় থাকার স্বপ্নসাধ গণআন্দোলনে ধূলিস্যাৎ হয়ে যাবে শিগগির।’
সোমবার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ সব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বুদ্ধিবৃত্তিক আলস্য বা প্রতিবন্ধীত্বের কারণে আওয়ামী নেত্রীর নিজের সৃষ্ট রাজনৈতিক সংকটকে আইনশৃঙ্খলা সমস্যা হিসেবে আখ্যায়িত করা প্রধানমন্ত্রীর মানসিক বৈকল্য ছাড়া আর কিছুই না। তিনি ইদানীং প্রায়শই বলেন, জনগণের জানমালের নিরাপত্তার জন্য যা যা করার দরকার তিনি তাই করবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সমগ্র জাতি আজ আপনার ও সরকারের পদত্যাগ চায়। আপনি দয়া করে এই কাজটি করলেই জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে বলে গোটাজাতি মনে করে।’
বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘গণবাহিনীর সাবেক অধিনায়ক হটকারী বিপ্লবী ইনুরা মুজিব হত্যার স্বঘোষিত পরিকল্পনাকারী। মুজিব হত্যার পরবর্তী সময়ে ইনু মোটর শোভাযাত্রার মাধ্যমে নৃত্য উল্লাস করে বর্তমানে মুজিব ভক্তের খাতায় নাম লিখিয়েছেন। এ জাতীয় রাজনৈতিক বারবণিতা ও দানবের কাছে জাতি মানবীয় সবক শুনতে চায় না।’
ইনুর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনার সারমেয় বাক্যবাণ বন্ধ করুন। জাতির কাছে অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার গণতন্ত্রে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তমের ফুটপাতেও বসার অধিকার নেই। ভিন্নমত পোষণকারীদের বিরুদ্ধে দলননীতি অবলম্বন করাই আওয়ামী রাজনীতির রোডম্যাপ।’
বিএনপি নেতা বলেন, ‘জাতির বরেণ্য ও জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের অবজ্ঞা ও অপমান করেছে আওয়ামী লীগ ও তার নেত্রী শেখ হাসিনা। নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অসম্মান ও অপদস্থ করে বিশ্বের দরবারে দেশকে অপমানিত করা হয়েছে। সম্প্রতি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর এমাজউদ্দিন আহমদের বাসায় গুলি বর্ষণের ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের আহ্বান জানাই।’
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘সরকার পেট্রোলবোমা হামলাসহ বিভিন্ন নাশকতার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকারবিরোধী গণআন্দোলনকে কলুষিত করে বিরোধীদলীয় আন্দোলনকারী নেতাকর্মীদের ওপর দায় চাপিয়ে আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে চায়। সরকার পরিচালিত ও প্রযোজিত একই রকম নাটকের অংশ হিসেবে গতকাল চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকার যুবলীগের কার্যালয় থেকে বিপুল পরিমাণ পেট্রোলবোমা উদ্ধার করা হয় যার সচিত্র প্রতিবেদন আজ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। অথচ সরকারদলীয় কাউকেই গ্রেফতার করা হয়নি। সুতরাং জাতির কাছে এটা পরিষ্কার, এ সমস্ত নাশকতার সঙ্গে কারা জড়িত।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় দলবাজ কর্মকর্তার নৃশংসতায় আন্দোলনকারী নেতাকর্মীদের লাশের স্তূপ উঁচু হচ্ছে। গুম-খুন-অপহরণ, গণগ্রেফতারে সারাদেশের অবস্থা বিস্ফোরণোন্মুখ। আমি এখনো দলবাজ সেইসব কর্মকর্তাদের আহ্বান জানাই, অবৈধ সরকারকে টিকিয়ে রাখার ব্যর্থ চেষ্টা করবেন না। অবৈধ সরকারি আদেশ আপনারা মানতে বাধ্য নন। জনগণের বিপক্ষ শক্তি হিসেবে নিজেদের দাঁড় করাবেন না। বিজাতীয় শত্রুর ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন না।’
বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গণতন্ত্র মুক্তি আন্দোলনের বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান অনির্দিষ্টকালের শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচির পাশাপাশি চলমান সর্বাত্মক হরতাল শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীসহ দেশবাসীকে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। গণবিরোধী অবৈধ সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’