বিসিএসআইআর কর্মকর্তার ভুয়া পিএইচডি : তদন্ত কমিটি গঠন
সাপোর্ট ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত মালা খানের স্বামী কেএম মোস্তফা আনোয়ার। স্বামীর সহায়তায় একিউ চৌধুরী সায়েন্স এ্যান্ড সিনার্জি কোম্পানির যন্ত্র বিক্রির জন্য তিনি একটি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (ডিপিপি) তৈরি করেন। এ লক্ষ্যে ২০০৭-০৮ সালে ২৯.২০ কোটি টাকার একটি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) প্রকল্পে যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও প্রকল্প পরিচালক পদে নিয়োগ পান। অথচ বিসিএসআইআরের কর্মবিধি অনুযায়ী একজন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (এসও) এডিপি প্রকল্পের প্রধান হওয়ার কথা নয়।
বিসিএসআইআরের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (এসএসও) মাসুদুর রহমান বলেন, ‘দুই বছরের আগে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করা সম্ভব না। আর মালা খান এখানে যোগদানের পর কোনো ছুটি নেননি। এছাড়া থিসিস জমা দেওয়ার ব্যাপার থাকে। বিজ্ঞানীদের এ প্রতিষ্ঠানে ভুয়া পিএইচডি ধারণের এ ঘটনা খুবই অপমানজনক। এর সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার।’
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০১ সালে কম্পিউটার সায়েন্স (ব্যাচেলর ডিগ্রি) নিয়ে পাস করলেও মাস্টার্স কিংবা এমফিল ডিগ্রি নেই মালা খানের। তার আমেরিকান ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির বাংলাদেশ স্টাডি সেন্টার থেকে পিএইচডি (রসায়ন) অর্জনের সনদ বিসিএসআইআর পরিষদ সচিবালয়ে জমা দেন ২০১১ সালের ১ জানুয়ারি। ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পিএইচডি ডিগ্রির কোর্স শুরুর আবেদন করার মাত্র এক বছর তিন মাসের মধ্যে তিনি পিএইচডি ডিগ্রির সনদ সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে জমা দেন। অথচ আমেরিকান ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির বাংলাদেশ স্টাডি সেন্টারের অনুমোদন নেই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের।
বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের পিএসও (প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা) ড. আবদুস সাত্তার বলেন, আমেরিকান ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি থেকে অনলাইনে এক হাজার ডলারের বিনিময়ে ৪০টি বিষয়ে যে কোনো ডিগ্রি কেনা সম্ভব। আমরা আমাদের চেয়ারম্যানের কাছে এ ব্যাপারে সুষ্ঠু তদন্তের আবেদন করেছি। এর পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে।
বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের পিএসও (প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা) ড. মো. মোস্তফা বলেন, ভুয়া ডিগ্রি দাবি করা এক ধরনের অপরাধ। এ অপরাধের শাস্তি হওয়া উচিত। আমাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ ব্যাপারটি তদন্তের জন্য বিসিএসআইআরের পরিচালক ড. হোসনা পারভীন নূরের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তবে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মালা খান সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমার ডিগ্রি ভুয়া নয়। আমি এ প্রসঙ্গে এখন আর কিছু বলতে চাচ্ছি না।
তদন্ত কমিটির প্রধান ড. হোসনা পারভীন নূর তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, তদন্ত চলাকালীন তো এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে জানানো হবে।