সংলাপ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী জঙ্গীদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র বসে না, আমরাও পারি না
সংলাপের প্রস্তাব ‘অবাস্তব ও অযৌক্তিক’ আখ্যা দিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘জঙ্গী তৎপরতায় জড়িতদের সঙ্গে সংলাপ হতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘সংলাপের প্রস্তাবকারীরা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে নাশকতাকারীদের এক কাতারে দাঁড় করাতে চেয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জঙ্গী তৎপরতায় জড়িত ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে আলোচনায় বসছে না। আমরাও জঙ্গীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারি না।’
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০১৫ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘এবারের বাণিজ্য মেলা প্রমাণ করেছে, হরতাল-অবরোধকারীদের পেট্রোলবোমা নিক্ষেপসহ কোনো বাধাই দেশের মানুষের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে পারবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘মেলায় শুধু কেনা-বেচা হয় না, বিনোদনও হয়। ১ জানুয়ারি মেলা শুরু হওয়ার পর ৫ জানুয়ারি থেকে বিএনপি বা ২০ দল কর্মসূচি দিয়েছে। হরতাল-অবরোধের নামে অরাজকতা ও জঙ্গী তৎপরতা না হলে মেলা আরও ভাল হতো।’
তিনি বলেন, ‘জঙ্গী তৎপরতার মধ্যেও গতবারের চেয়ে এবার মেলায় ১৫ কোটি টাকার বেশী রফতানি আদেশ পাওয়া গেছে। গতবার রফতানি আদেশ পাওয়া গিয়েছিল ৮০ কোটি টাকার। এবার ৯৫ দশমিক ০৫ কোটি টাকার রফতানি আদেশ পাওয়া গেছে।’
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তিতে শুধুমাত্র তৈরি পোশাক খাতেই বাংলাদেশ ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি করবে। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে।’
তিনি বলেন, দেশে এখন রফতানি আয় ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং রেমিটেন্স আসছে ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যারা এক সময় উপহাস করে বাংলাদেশকে ‘বটমলেস বাস্কেট’ বলত, তাদের কথা মিথ্যা প্রমাণিত করেছে এ দেশের মানুষ।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ) প্রাঙ্গণের অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন— বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন ও বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ। সভাপতিত্ব করেন রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান শুভাশীষ বসু।
প্রধান অতিথি মেলায় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। বিশেষ অতিথিরা মেলায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাঝে সার্টিফিকেটও বিতরণ করেন।
সমাপনী অনুষ্ঠানের ভাষণে তাজুল ইসলাম বলেন, দেশের মানুষের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারলে এ মেলা আরও সার্থক হবে। হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন বলেন, সরকারের রাজনৈতিক দূরদর্শিতায় দেশে বিশাল ভোক্তা শ্রেণী তৈরি হয়েছে।
কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ বলেন, হরতাল-অবরোধর কারণে বাণিজ্য মেলা চলবে কিনা, এটা নিয়ে শঙ্কা ছিল। কিন্তু জনগণের সাহসী ভূমিকায় মেলা সুন্দরভাবে শেষ হয়েছে। এতে প্রমাণ হয়, বাংলাদেশের মানুষ সাহসী। তাদের পদচারণায় দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।