ঢাবির ছাত্রলীগ নেত্রীর হাতে কেন্দ্রীয় নেতা লাঞ্ছিত
ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নেত্রীর হাতে লাঞ্চিত হয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শামসুল কবির রাহাত। শামসুন নাহার হল শাখা কমিটির সভাপতি নিশিতা ইকবাল নদীর নেতৃত্বে এ হামলা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
রাহাতকে লাঞ্ছনা করার কিছুক্ষণ পর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং রাহাতের অনুসারী মাহবুব খানও বেধড়ক মারধরের শিকার হন। মাথায় আঘাত লাগায় তার সিটি স্ক্যান করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছাত্রলীগের সূর্যসেন হল শাখা সভাপতি মোবারক হোসেন এবং তার অনুগত নেতাকর্মীরা মাহবুবের ওপর হামলা চালায়।
রাজধানীর শাহবাগে পাবলিক লাইব্রেরির সামনে মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী এবং অন্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাহাত এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক ওয়ালিউর রহমান বিপুল রিকশাযোগে ক্যাম্পাসের বাইরে ব্যক্তিগত কাজে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে শাহবাগ মোড়ে নদীসহ বেশকিছু নেতাকর্মী কথা আছে বলে রাহাতকে দাঁড়াতে বলেন। এ সময় রাহাতের কাছে নদী জানতে চান তার বিরুদ্ধে কেন অপ্রচার চালানো হচ্ছে?
জবাবে রাহাত এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ থাকলে কেন্দ্রীয় সভাপতি অথবা সাধারণ সম্পাদকের কাছে অভিযোগ করতে বলেন। এভাবে রাস্তায় কোনো জবাব দেবেন না বলে তিনি জানান। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথাকাটাকাটি হওয়ার এক পর্যায়ে ওই নেত্রীসহ কয়েকজন রাহাতকে লাঞ্চিত করেন। এরপর সেখান থেকে রাহাত চলে যান।
ওই ঘটনার কিছুক্ষণ পর একই স্থানে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য এবং রাহাতের অনুসারী মাহবুব উপস্থিত হলে তার ওপর ছাত্রলীগের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আক্রমণ করেন। তাদের এলোপাতাড়ি মারধরে মাহবুব মাথায় গুরুতর আঘাত পান। পরে অন্যরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
ছাত্রলীগের সূর্যসেন হল শাখা সভাপতি মোবারক হোসেন এবং তার অনুগত নেতাকর্মীরা হামলা করেছে বলে ভুক্তভোগীরা দাবি করেছেন।
লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা স্বীকার করে শামসুল কবির রাহাত বলেন, ‘জামায়াত-বিএনপি যখন দেশ জুড়ে তাণ্ডব চালাচ্ছে, তখন সংগঠনের একটি অংশ কেন সেদিকে খেয়াল না করে অভ্যন্তরীণ কোন্দল সৃষ্টি করছে তা আমার বোধগম্য নয়।’
সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোবারক হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি রাহাত ভাই এবং নদীর মধ্যে। এতে আমাকে জড়ানোর তো কিছু নেই। নদীর এলাকার হওয়ার কারণে যদি আমার হলের কেউ কিংবা চারুকলায় পড়ুয়া আমার হলের কেউ যদি এসবের সঙ্গ জড়িত থাকে তাতে আমার কী করার থাকতে পারে?’
জানতে চাইলে নিশীতা ইকবাল নদী বলেন, ‘রাহাত ভাই কেন্দ্রীয় নেতা। অপরজনও কেন্দ্রীয় কমিটির। তাদেরকে লাঞ্চিত করার প্রশ্নই আসে না।’
তবে রাহাতের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘রাহাত ভাই আমার নামে অপপ্রচার চালিয়েছে। একজন সাংবাদিককে সঙ্গে তিনি আমার বিষয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন এবং আমি সে রেকর্ড শুনেছি।’
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ বলেন, ‘আমরা বিষয়টির তদন্তের জন্য সহ-সভাপতি আব্দুল কাদের মহিউদ্দিন মাহি, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান তারেক, সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান রুবেলকে সদস্য করে কমিটি করেছি। কমিটিকে সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। সংগঠনে যে-ই বিশৃংখলা সৃষ্টির চেষ্টা করবে তার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’