টকশোতে উস্কানিদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা : প্রধানমন্ত্রী
টিভি চ্যানেলের টকশোতে উস্কানিদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দশম সংসদের পঞ্চম অধিবেশনে বুধবার প্রশ্নোত্তর পর্বে ঢাকা-৭ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমের ‘সাংবাদিকরা টকশোতে রাতের আঁধারে সুড়সুড়ি দিচ্ছে, তাদের বিষয়ে কিছু করবেন কিনা?’ প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ সব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষমতার লোভে মানুষ হত্যা করা, এটা কোন ধরনের রাজনীতি? যারা এ ধরনের উস্কানিমূলক কথা বলবে, এগুলো দেখা হবে, মনিটর করা হবে এবং এদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকার যদি কোনো অপরাধ করে সমালোচনা করুক। কিন্তু এ ধরনের মানুষ হত্যার ঘটনায় উস্কানি দেওয়ার অধিকার তাদের নেই। তাহলে তারাও সমান দোষী হয়ে যাবে এবং এই খুনের দায়-দায়িত্ব তাদের ওপরও বর্তাবে।
তিনি বলেন, যারা উস্কানি দিচ্ছে, মানুষের জীবন নিয়ে খেলছে, মানুষের লাশ ফেলে কিছু লোক সেখান থেকে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। যারা জীবনে দল করতে পারে না, নির্বাচন করতে পারে না, কিন্তু তাদের ক্ষমতায় যাওয়ার খায়েশ। আজকে শত শত মানুষ পুড়ে অঙ্গার হয়ে যাচ্ছে, সেই দিকে তাদের দৃষ্টি নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কী দুর্ভাগ্য দেশের এত বড় বড় (ড. কামাল) নেতা। তারা একাধারে রাজনৈতিক দলও করে, আবার একাধারে সুশীলও হয়ে যায়। সেই সাথে টকশো করে। প্রাইভেট চ্যানেলগুলো আমারই দেওয়া। সেখানে বসে মানুষকে উস্কে দিচ্ছে। কোথায় আমি আশা করি, তারা অন্তত এটা বলবে, খালেদা জিয়াকে অনুরোধ করবে, তিনি যেন মানুষ পোড়ানো বন্ধ করেন। তারা বলে কী, আর কয়টা দিন চলুক ঘটনা ঘটবে। কী ঘটনা ঘটবে? কেউ এসে তাকে চেয়ারে-ক্ষমতায় বসিয়ে দেবেন? এ আশায় তিনি একটার পর একটা মানুষের লাশ ফেলে যাচ্ছেন? এই আশায় বসে আছেন।
তিনি বলেন, যারা এত কথা বলছেন, তারা কয়জন বার্ন ইউনিটে গেছেন? মাহমুদুর রহমান মান্না, ড. কামাল হোসেনরা বসে আছেন খালেদা জিয়া মানুষ হত্যা করবে, তার পর এমন একটা ঘটনা ঘটবে, ব্যস; তারা লাশের পথ বেয়ে ক্ষমতা দখল করতে পারবেন। এই চিন্তা নিয়েই তারা আছেন। কিন্তু তাদের সে আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হবে না। এটা আমি স্পষ্ট বলতে পারি। তাদের এই আশা নিরাশাই হবে। কারণ বাংলাদেশে গণতন্ত্র এসেছে, গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা থাকবে। যারা জনগণের জানমাল নিয়ে খেলবে তাদের জনগণ কেন ক্ষমতায় বসাবে?
শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়ার পুত্র মারা যাওয়ার পর তাকে শোক জানাতে গেলেন আমাদের ড. কামাল হোসেন, মাহমুদুর রহমান মান্না। তারা যখন শোক জানাতে গেলেন আমি ভেবেছিলাম, তারা সব সময় হরতালের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তারা অনুরোধ করবেন অন্তত এসএসসি পরীক্ষার স্বার্থে হরতাল-অবরোধ যেন প্রত্যাহার করা হয়। খুব অবাক হয়ে গেলাম, তাদের মুখ থেকে একটি বারের জন্যও হরতাল প্রত্যাহারের কথা এলো না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া পুত্র হারিয়েছেন সে জন্যই তো দেখতে গিয়েছিলাম। কিন্তু দেখতে যাওয়ার সাথে সাথে দরজা আটকে দিয়ে যে অপমান তিনি করে দিলেন, সে অপমান বোধ হয় কেউ হজম করতে পারবে না। সরকারপ্রধান হিসেবে আমি সেটা হজম করেই চলে এসেছি। কিছু বলিনি। কিন্তু আর কেউ কি পারবে এটা মেনে নিতে? পারবে না।