নিউইয়র্ক টাইমসের সম্পাদকীয়: বিশৃঙ্খলার দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ, দায়ী দুই দল
রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে বাংলাদেশ। এ জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপির একগুঁয়েমি দায়ী।
প্রভাবশালী মার্কিন দৈনিক দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের সম্পাদকীয়তে এ মন্তব্য করা হয়েছে।
বাংলাদেশে সহিংসতা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ওই সম্পাদকীয়তে বলা হয়, দুই দল তাদের এই একগুঁয়ে অবস্থান থেকে সরে না আসলে, তাদের সমর্থকদের সহিংসতা না দমন করলে এবং দেশের অস্থির গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে গ্রহণযোগ্য সংলাপ শুরু না করলে দেশজুড়ে শুরু হওয়া সহিংসতা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার ঝুঁকি থাকবে।
দ্য নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তির আগে দেশে সংকট শুরু হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ওই নির্বাচন বর্জন করেছিল বিএনপি। তাই ক্ষমতাসীনরা অনেকটা বিনা বাধায় নির্বাচিত হয়। নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় মূলধারার রাজনীতি থেকে কার্যকরভাবে বিএনপিকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এ কারণে বিএনপি ও তার রাজনৈতিক সহযোগী জামায়াতের মধ্যে ক্ষোভ দিন দিন বাড়ছে।
অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও কোনো রাজনৈতিক সমঝোতায় না এসে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমনের চেষ্টা করছেন বলে মনে হচ্ছে। ৩ জানুয়ারি থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে তার কার্যালয়ে আটকে রাখা হয়েছে বলেও ওই সম্পাদকীয়তে উল্লেখ করা হয়।
এর প্রতিক্রিয়ায় খালেদা ও তার দল দেশব্যাপী অবরোধ ডাকে। সহিংস হামলার মাধ্যমে বিএনপি অবরোধ সফল করার চেষ্টা করে। এসব হামলায় ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৬৩ জন নিহত হয়েছে। জবাবে শেখ হাসিনাও বিরোধীদের কঠোরভাবে দমন করছেন।
যেখানে সহিংসতার জন্য দায়ী অপরাধীদের গ্রেফতার করে শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন, সেখানে হাসিনার কঠোর অবস্থান সহিংসতার আগুনে আরও ঘি ঢালছে উল্লেখ করে সম্পাদকীয়তে বিএনপিকে এসব সহিংসতার ব্যাপারে রাশ টানার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে জামায়াতের সঙ্গ ছাড়ার কথাও বলা হয়েছে। রাজপথে শক্তি প্রয়োগের কৌশল থেকেও সরে আসার কথা বলা হয়েছে।
তবে হাসিনা সরকারেরও নির্যাতনের জন্য দায়ী নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিচারের আওতায় আনা উচিত বলে সম্পাদকীয়তে মন্তব্য করা হয়েছে।
নির্বাচনী সংস্কার ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরে যাওয়ার জন্য সরকারের বিরোধী দলকে আমন্ত্রণ জানানো উচিত বলেও ওই সম্পাদকীয়তে উল্লেখ করা হয়েছে।