‘ক্যাবিনেটের আলোচনা তো গণমাধ্যমে চলে যায়’ সিটি নির্বাচনের ফাইলে প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষর
ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠান সংক্রান্ত ফাইলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাক্ষর করেছেন বলে জানা গেছে। একই সঙ্গে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সিটি নির্বাচন দেওয়ার বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
সচিবালয়ে সোমবার ৪৯তম মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী ওই ফাইলে স্বাক্ষর করেন বলে সভায় উপস্থিত একাধিক সদস্য জানান। এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মনজুর হোসেন বলেন, ‘ফাইলটি আমি এখনো দেখিনি। দেখলে বলতে পারবো।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বেশ কিছুদিন আগে থেকেই ঢাকা সিটি নির্বাচনের বিষয়ে তাগিদ দিয়ে আসছিলেন। আজ ওই সংক্রান্ত ফাইলে স্বাক্ষরের মাধ্যমে নির্বাচনের বিষয়টি আরও এগিয়ে আনলেন।’
সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে ঢাকা সিটি নির্বাচন নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ অনির্ধারিত আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ব্যবসায়ী নেতা আনিসুল হককে আওয়ামী লীগের প্রার্থী করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী মত দিয়েছেন। তবে, ঢাকা দক্ষিণের প্রার্থীর বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি শেখ হাসিনা।
এ বিষয়ে অপর মন্ত্রিপরিষদ সদস্য দ্য রিপোর্টকে জানান, ঢাকা সিটি নির্বাচনে দক্ষিণের প্রার্থী আপা (প্রধানমন্ত্রী) পরে ঠিক করবেন। সুনির্দিষ্টভাবে তিনি কারো নাম বলেননি।
‘ক্যাবিনেটের আলোচনা তো গণমাধ্যমে চলে যায়’
বৈঠকে উপস্থিত সূত্রে আরও জানা গেছে, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার ফাঁস হওয়া ফোনালাপ নিয়ে একাধিক মন্ত্রিপরিষদ সদস্য প্রসঙ্গ তুললেও প্রধানমন্ত্রী কোনো মন্তব্য করেননি। প্রধানমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ক্যাবিনেটের আলোচনা সবই তো গণমাধ্যমে চলে যায়।’
প্রসঙ্গত, ৪৮তম মন্ত্রিসভা বৈঠকে (১৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা সিটি নির্বাচন দেওয়ার জন্য স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। এর এক সপ্তাহ পরই এ সংক্রান্ত ফাইলে স্বাক্ষর করলেন শেখ হাসিনা।
বৈঠকে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা হয়নি জানিয়ে সূত্র জানায়, সরকার মনে করে বিএনপির আন্দোলনের কার্যকারিতা এখন নেই। সিটি নির্বাচন এগিয়ে আসলে মানুষ নির্বাচনমুখী হবে। তখন বিএনপির আন্দোলনের তেমন কোনো কার্যকারিতাও থাকবে না।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০০২ সালে। ২০০৭ সালে মেয়াদ শেষ হওয়ার সময় তৎকালীন সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়নি।
এরপর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনকে দুই ভাগে ভাগ করে নির্বাচন দেওয়ার কথা বললেও ‘সীমানা জটিলতা’র কারণে তা আটকে যায়।
সম্প্রতি সীমানা সংক্রান্ত জটিলতা দূর হলে নির্বাচন অনুষ্ঠানের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। এরই ধারাবাহিকতায় নির্বাচন সংক্রান্ত ফাইলে স্বাক্ষর করলেন তিনি।
নিয়ম অনুযায়ী স্থানীয় সরকার থেকে নির্বাচন কমিশনে সিটি নির্বাচন আয়োজনের অনুরোধ জানালে নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা নেবে নির্বাচন কমিশন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ একাধিক নির্বাচন কমিশনার ঢাকা সিটি নির্বাচনের জন্য তারা প্রস্তুত বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।