ময়মনসিংহে ১৩ জনের যাবজ্জীবন
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে পাঁচজনকে খুনের দায়ে ১৩ জনকে যাবজ্জীবন ও দুই জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
খুনের ঘটনার ১৯ বছর পর বুধবার দুপুরে বিশেষ দায়রা জজ আদালতের বিচারক ড. মোহাম্মদ আমীর উদ্দিন এই রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন— হালুয়াঘাট উপজেলা সদরের গরুহাটা গোপীনগর এলাকার হোসেন আলীর পুত্র হক মিয়া, আকবর আলীর পুত্র সিরাজুল, মানিক ও আজিজুল, ওমেদ আলীর পুত্র আব্দুস সাত্তার, বারেক, নুর মোহাম্মদ ও কাসেম, আব্দুল হেকিম মুন্সীর পুত্র ফজলুল করিম, আবু তাহের ওরফে নকুল ও আবুল খায়ের, সোবহানের পুত্র গফুর উদ্দিন এবং আব্দুল হেকিমের পুত্র রমজান।
দশ বছর সাজাপ্রাপ্তরা হলেন— জসিম উদ্দিন ওরফে জসু ও আব্দুর রাজ্জাক।
মামলায় ১০৭ জন আসামীর মধ্যে ১৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান এবং বাকিদের বেকসুর খালাস প্রদান করে আদালত। এর মধ্যে ৭ জন পলাতক রয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৭ সালে গরুর ধান খাওয়াকে কেন্দ্র করে হালুয়াঘাট উপজেলা সদরের গরুহাটা গোপীনগর এলাকায় জালাল উদ্দিনের সাথে হোসেন আলী মণ্ডলের বাকবিতণ্ডা ও ঝগড়া এবং এরপর চার দফা গ্রাম্য সালিশ হয়। এতে সুরাহা না হওয়ায় ৯ মে হোসেন আলী মণ্ডলের নেতৃত্বে শতাধিক এলাকাবাসী জালাল উদ্দিনের বাড়ির ৫টি ঘরে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এ সময় জালাল উদ্দিনের ছোট ভাই আব্দুল মোতালেবকে (৪২) কুপিয়ে জখমের পর আগুনে পুড়িয়ে হত্যা এবং জালাল উদ্দিনের বড় ভাই নুরুল ইসলাম (৬০), ছোট ভাই আব্দুর রশিদ (৪৫), ভাতিজা সাজাহান (২৬) ও একমাত্র ছেলে আলমগীরকে (১৮) রামদা, বল্লম, কিরিচ ও ছুরি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় জালাল উদ্দিন বাদী হয়ে পরদিন হালুয়াঘাট থানায় ১০৭ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে বিভিন্ন সময় পুলিশ হোসেন আলী মণ্ডলসহ একশ’ জনকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। এরপর সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে দীর্ঘ ১৯ বছর পর আদালত ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং দুইজনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করে।