শেরপুর জেলা হাসপাতালে পান বিরোধী অভিযান
প্রাচীনকাল থেকেই গ্রাম-বাংলায় ‘পান’ এর বিশেষ কদর থাকলেও আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে এটা অন্যতম প্রধান বদভ্যাস বলেই চিহ্নিত হয়ে আসছে। পান চিবানোর কারণে কেবল মুখেই নয়, শরীরে অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গেও রোগ-জীবাণু বিস্তার লাভ করতে পারে। কমে যেতে পারে শ্রবণশক্তিও। অন্যদিকে ঘন ঘন পান চিবানোর কারণে মুখের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি মুখ থেকে নিঃসৃত পানের বর্জ্য ও পিক পরিবেশকে নষ্ট ও দুষিত করে তুলে। আর সেই বদভ্যাসগ্রস্ত পুরুষ-মহিলাদের চিবানো পানের বর্জ্য ও পিকে যদি নষ্ট ও দুষিত পরিবেশ সৃষ্টি হয় রোগ নিরাময় কেন্দ্র, স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র কিংবা হাসপাতালে, তবে তা একেবারেই ভয়ানক ও কান্ডজ্ঞানহীন। কিন্তু কর্তৃপক্ষের কড়া নজরদারির পরও এমনই বদভ্যাসগ্রস্ত লোকদের কবল থেকে রক্ষা করা যাচ্ছে না শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের পরিবেশ।
জানা যায়, ১০০ শয্যার বর্তমান জেলা সদর হাসপাতালে গড়ে প্রতিদিন ভর্তি থাকছেন প্রায় ২ শতাধিক রোগি। আর ওইসব রোগির সাথে হাসপাতালে বা রোগিদের সাথে অবস্থান করছেন আরও প্রায় ৩ শতাধিক আত্মীয়-স্বজন। ওইসব রোগি আর তাদের আত্মীয়-স্বজনদের ৮০ ভাগই গ্রামাঞ্চলের ও দরিদ্র জনগোষ্ঠির হওয়ায় তাদের স্বাস্থ্য-পরিবেশ সচেতনতাও অনেকটাই কম। যে কারণে রোগিদের বিছানায় বসেই হরহামেশা পান চিবানো এবং যত্রতত্র তার বর্জ্য ও পিক ফেলা ছিল নিত্য দিনের ঘটনা। কিন্তু ওই বদভ্যাসের বিরুদ্ধে সম্প্রতি বিশেষ অভিযান পরিচালনাসহ পরিবেশ সুরক্ষায় জনসচেতনতা সৃষ্টির উপর দীপ্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করেন জেলা সদর হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি, সরকারদলীয় হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিউর রহমান আতিক এমপি। ফলে তার ব্যক্তিগত অর্থায়নে ওই হাসপাতালে পান চিবানোয় বদভ্যাসগ্রস্ত লোকজনকে সতর্ক করতে নিয়োগ দেওয়া হয় একজন কর্মী। এরপরও আরএমও ডাঃ গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে স্টাফদের মাধ্যমে মাঝেমধ্যেই চালানো হয় বিশেষ অভিযান। ২৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকালে হাসপাতালের নারীবান্ধব কর্মসূচির মনিটর হাসনারা পারভীন, ওয়ার্ড মাস্টার হাদিসুর রহমান শোভা, এমএলএসএস হান্নান ও নাহিদ এমনই এক অভিযান পরিচালনা করে হাসপাতালে রোগিদের পাশে থাকা শতাধিক আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে জব্ধ করেন এক বালতি পানের পোটলা, সুপারি, জর্দা, খয়ের, পাতা ও চুনসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি। পরিবেশ দুষিত করায় তাদের ভৎর্সনা করা হয়। পরে সেগুলো বিনষ্ট করা হয়।