মুনের চিঠির জবাব প্রস্তুত, যাচ্ছে যে কোনো সময়
বাংলাদেশের চলমান সঙ্কট নিরসনে মধ্য ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে চিঠি দেন। শেখ হাসিনার পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চিঠির জবাব প্রস্তুত করেছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাস এবং সহিংসতা ঘটাচ্ছে, তাদের সঙ্গে সংলাপ সম্ভব নয়।
যে কোনো সময় জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের প্রতি চিঠিটি পাঠানো হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রবিবার দ্য রিপোর্টকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
অন্যদিকে, বিএনপির পক্ষ থেকে জাতিসংঘের ঢাকা অফিসের মাধ্যমে বান কি মুনের চিঠির জবাব গত বৃহস্পতিবার পাঠানো হয়েছে। তবে তা এখনো জাতিসংঘ মহাসচিবের হাতে পৌঁছেনি।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম রবিবার দ্য রিপোর্টকে জানান, বান কী মুনের চিঠির জবাব বিস্তারিতভাবে দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে চিঠির জবাব প্রস্তুত করা হয়েছে। কিছু আনুষ্ঠানিকতা বাকি রয়েছে। আজকালের মধ্যেই চিঠিটি জাতিসংঘ মহাসচিব বরাবর পাঠানো হবে।
এর আগে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক গত শনিবার দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘জাতিসংঘ মহাসচিবের দেওয়া চিঠির জবাব এখনো দেওয়া হয়নি।’
জাতিসংঘ মহাসচিবের উপ-মুখপাত্র ফারহান হক গত শনিবার দ্য রিপোর্টকে জানান, বাংলাদেশের প্রধান দুই নেতাকে জাতিসংঘ মহাসচিবের দেওয়া চিঠির জবাব এখনো পাওয়া যায়নি।
সরকারের পক্ষে জাতিসংঘ মহাসচিবকে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করা চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন জামায়াতে ইসলামীকে নির্বাচনের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করেছে। জামায়াতে ইসলামী এবং হেফাজতে ইসলাম গত বছর নির্বাচনের আগে ও পরে সহিংসতা কার্যক্রম চালিয়ে ব্যাপক হত্যা ও জানমালের ক্ষতি করেছে। অথচ বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি এই দল দুইটটিকে সমর্থন দিয়ে সহিংস কর্মকাণ্ডের প্রশ্রয় দিচ্ছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকার বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে এবং গণতন্ত্রের যাত্রা অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত। তাকে কেউ অবরুদ্ধ করে রাখেনি। অথচ খালেদা জিয়া নিজেকে অবরুদ্ধ বলে দেশে অরাজকতা এবং অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছেন।
চিঠিতে বিএনপি নেতার সঙ্গে ভারতের বিজেপি নেতার ফোনালাপ কেলেঙ্কারি এবং মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের ভুয়া বিবৃতির তথ্য জানান হয়েছে।
তারেক রহমান সম্পর্কে চিঠিতে বলা হয়েছে, বিএনপির সিনিয়র নেতা তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার না করতে সম্প্রতি হাইকোর্ট থেকে মিডিয়াকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেননা তারেক রহমান বিভিন্ন মামলার আসামী। তিনি (তারেক রহমান) পলাতক অবস্থায় বিবৃতি দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করছেন।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, গত পাঁচ জানুয়ারি থেকে বিএনপি-জামায়াত জোট সারাদেশে সহিংস কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে, সবাইকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত জোটের সহিংস কর্মকাণ্ডের কারণে বাংলাদেশের গণতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িক চেতনা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। গণতন্ত্রে কখনোই সহিংসতা কাম্য নয়। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট আইএসআইএস এবং বিশ্বের অন্য জঙ্গি গোষ্ঠীর মতো নিরীহ জনগণ ও যানবাহনের উপর পেট্রোলবোমা ছুড়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করছে। কিন্তু সরকার সহিংসতা বন্ধ করতে এবং জনগণের নিরাপত্তা দিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। এই অঙ্গীকার সরকার নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করছে।