গুলশানের কার্যালয়ে অবস্থানকারীদের মনে নানা প্রশ্ন
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয় তল্লাশি চালাতে আদালতের অনুমতির পর অফিসের ভেতরে অবস্থানরত নেতা-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মনে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। অনেকের নামে মামলা থাকায় কী ঘটতে যাচ্ছে কিংবা তল্লাশির সময়ে তাদের গ্রেফতার করা হবে কিনা এ সব প্রশ্ন ঘুরে ফিরে আসছে। কার্যালয়ের অবস্থানকারীদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।
তল্লাশির অনুমতি প্রসঙ্গে কার্যালয়ে অবস্থান করা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান রলেন, ‘সরকার তার ইচ্ছেমতো সবকিছুই পরিচালনা করছে। কার্যালয়ের ভেতরে যারা আছেন তাদের ভীতি প্রদর্শনের জন্য সরকার এমন করতেই পারে।’
সেলিমা রহমান আশঙ্কা প্রকাশ করেন, ‘তল্লাশির সময়ে পুলিশ বাইরে থেকে কিছু নিয়ে এসে এর দায়ভার আমাদের ওপর চাপাতে পারে। তবে এসব আশঙ্কা থাকলেও এই মুহূর্তে আন্দোলন ছাড়া আর কিছু ভাবছি না।’
বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল বলেন, ‘আদালতের তল্লাশির অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমের কল্যাণে শুনেছি। সরকার যা ইচ্ছে তাই করতে পারে। দেখা যাক কী করে।’
খালেদা জিয়ার কার্যালয় তল্লাশির খবর জানেন কিনা এমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘হয়ত তিনি শুনেছেন।’
৩ জানুয়ারি রাত থেকে গুলশান কার্যালয়ে আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। কার্যালয়ে আরও আছে দলের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল কাইয়ুম, প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান, বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, মাহবুব আলম ডিউ, নিরাপত্তা সমন্বয়ক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আবদুল মজিদ, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার, শায়রুল কবির খানসহ প্রায় অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী।
এদিকে, বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে তল্লাশি চালানোর সময় আইনজীবীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন।
রবিরার সন্ধ্যায় সুপ্রীম কোর্টে নিজ চেম্বারে এক সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাজনৈতিক চমক সৃষ্টির জন্য এ সার্চ ওয়ারেন্ট জারি করা হয়েছে। আমরা আশঙ্কা করছি, যারা খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে তল্লাশি চালাতে যাবেন, তারা গ্রেনেড, বোমা কিংবা আগ্নেয়াস্ত্র সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেন। তাই যারা সেখানে তল্লাশির জন্য যাবেন নিরপেক্ষ লোক দিয়ে আগে তাদের শরীর তল্লাশি করতে হবে। আর অবশ্যই সেখানে খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।’
দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর অন্য একটি মামলায় তার কার্যালয়ে তল্লাশি চালাতে রোববার আদালতের অনুমতি নিয়েছে পুলিশ। নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের মিছিলে বোমা হামলার ঘটনায় বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় পুলিশ তল্লাশি চালাতে পরোয়ানা চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিল। ওই আবেদনে ঢাকার মহানগর হাকিম এস এম মাসুদ জামান গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে তল্লাশির জন্য রবিবার পরোয়ানা জারি করেন।
পুলিশের আবেদনে বলা হয়, ওই কার্যালয়ে বিস্ফোরক থাকতে পারে এবং পলাতক আসামিরা সেখানে থাকতে পারেন।