‘প্রগাঢ় বন্ধুত্ব গড়তে চায় মোদি সরকার’
বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে প্রগাঢ় বন্ধুত্বের বন্ধন গড়তে চায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বে দেশটির বর্তমান সরকার। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে চলমান সকল বিষয়ের সমস্যা দ্রুত সমাধান করতে চায় দেশটি।
ঢাকা সফররত ভারতের নতুন পররাষ্ট্র সচিব সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক শেষে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক সোমবার বিকেলে গণমাধ্যমকর্মীদের এ তথ্য জানান।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লক্ষ্য সম্পর্কে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বলেন, ‘মোদি সরকারের মূল ফোকাস হল আঞ্চলিক দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী করা। প্রতিবেশী দেশগুলোর যে কোনো সমস্যা থাকলে তা দ্রুত সমাধান করা। এখানে আমরা মেজর পরিবর্তন দেখছি। তারা (ভারত) প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে চায়। প্রগাঢ় বন্ধুত্ব গড়তে চান মোদি।’
সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠক সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এটি সার্কভুক্ত কয়েকটি দেশের মধ্যে সফরের একটি অংশ। ঢাকায় এটা তার প্রথম সফর। আমাদের মধ্যে সংক্ষিপ্তভাবে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে অনেকগুলো বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সম্পর্কের বহুমাত্রিকতা নিয়ে আলাপ হয়েছে। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, উপ-আঞ্চলিক সম্পর্ক, আঞ্চলিক সম্পর্ক এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক— এই চারটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের মধ্যে মতবিনিময় হয়েছে এবং আমরা উভয়ে এই বিষয়গুলো নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছি।’
বৈঠকের বিস্তারিত বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলে শহীদুল হক বলেন, ‘দ্বিপাক্ষিক সবগুলো বিষয়েই আলোচনা হয়েছে। দুই দেশের সম্পর্কের ব্যাপকতা অনেক। দুটি করে লাইন লিখলেও ২৫ পৃষ্ঠা হবে। এরকম সংক্ষিপ্ত সময়ে বা শুভেচ্ছা সফরে এ বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা সম্ভব নয়। তবে সার্বিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। দুই পক্ষই সকল বিষয়ে আশাবাদী।’
তিস্তা চুক্তি ও স্থল সীমানা চুক্তির বাস্তবায়ন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সবগুলো বিষয় নিয়েই আলাপ হয়েছে। যে বিষয়ের কথাই বলুন না কেন, সবগুলো বিষয়েই আলাপ হয়েছে। কিন্তু আমি কী আলাপ করেছি তা তো বলব না। আমরা উভয়েই আশাবাদী এটুকু বলতে পারি।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। মোদি এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন। সুবিধাজনক সময়ে এই সফর হবে। নির্দিষ্ট কোনো সময় বলা যাচ্ছে না। কোনো তারিখ সম্পর্কে আমি ওয়াকিবহাল নই।’
এর আগে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক দ্য রিপোর্টকে জানান, ভারতের নতুন পররাষ্ট্র সচিব সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর শুভেচ্ছা সফরে ঢাকা এসেছেন। পররাষ্ট্র সচিবের দায়িত্ব নেওয়ার পর এটিইসুব্রামানিয়াম জয়শঙ্করের প্রথম সফর। তিনি আরও জানান, এটি মূলত শুভেচ্ছা সফর। এটি কোনো দ্বিপাক্ষিক সফর নয়। এই সফরে দুই দেশের মধ্যে কোনো চুক্তি বা সমাঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হওয়ার সুযোগ নেই।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সোমবার দুপুরে সাক্ষাৎ করেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সৈয়দ আকবর উদ্দিন জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পরামর্শ অনুযায়ী নতুন পররাষ্ট্র সচিব সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর মার্চের শুরু থেকে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোতে শুভেচ্ছা সফর করছেন, যার ধারাবাহিকতায় তিনি ১ মার্চ ভুটান, ২ মার্চ বাংলাদেশ, ৩ মার্চ পাকিস্তান এবং ৪ মার্চ আফগানিস্তান সফর করবেন।