‘ফাস্ট বোলারদেরই দায়িত্বটা বেশি’
বিশ্বকাপ ক্রিকেটে গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের বাকি রয়েছে আর ৩টি ম্যাচ। কোয়ার্টার ফাইনালে খেলতে চাইলে বাকি এই ৩ ম্যাচের ২টি জয় পেতেই হবে টাইগারদের। তা না হলে গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নিতে হবে সাকিব-মাশরাফিদের। এমন সমীকরণ সামনে রেখে আগামী ৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডের নেলসনে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। ওই ম্যাচ জিতে নিজেদের মানসিকভাবে চাঙ্গা করতে চায় টাইগাররা। কেননা, পরের ম্যাচেই আবার খেলতে হবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। তাই তো স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ জিতে মনোবল চাঙ্গা করতে চায় টাইগাররা। এ জন্য অবশ্যই মূল দায়িত্ব পালন করতে হবে পেসারদের; স্কটল্যান্ড ম্যাচের আগে এমটাই মনে করছেন সাকিব আল হাসান। মঙ্গলবার নেলসনে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে কি পরিকল্পনা থাকছে কিংবা ওদের পরিকল্পনাগুলো প্রতিরোধ করার জন্য আপনারা কি ভাবছেন? এ প্রশ্নে সাকিব বলেছেন, ‘আসলে ওরা কি করবে এটা ফোকাস না করে আমরা কি করতে পারি, এর দিকেই ফোকাস করছি। এর আগে আমরা কি কি ভুল করেছি; এখন সে সব ভুলের সমাধান নিয়ে কাজ করছি। আমরা নিজেদের সেরা ক্রিকেট খেলতে পারলে অবশ্যই জিতব।’
এই ম্যাচকে কেন্দ্র করে আপনাদের মানসিক প্রস্তুতিটা কেমন? এ প্রশ্নে সাকিব আল হাসান বলেছেন, ‘প্রস্তুতি সবারই ভাল। বেশ কয়েকদিন সময় ছিল আমাদের নিজেদের ভুলগুলো শুধরে নেওয়ার। ভাল কিছু সেশন পার করেছি এ ক’দিনে। নেটে ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং অনুশীলন করেছি আমরা। সবমিলিয়ে আমি বলব, ভালই হয়েছে প্রস্তুতিটা। সবাই ফিট আছে। এখন মাঠে এটা বাস্তবায়ন করাটাই মূল বিষয়।’
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খুব বাজে ফিল্ডিং হয়েছে। ফিল্ডিং ব্যর্থতা কাটাতে অনুশীলনে বাড়তি কোনো কিছু নিয়ে কাজ করেছেন কিনা? উত্তরে তিনি বলেছেন, ‘ফিল্ডিং অনুশীলন যেমন হয়, আসলে ওভাবেই করা হয়েছে। এর আগের ম্যাচে (আফগানিস্তান) আমরা ভাল ফিল্ডিং করেছি। কোনো ম্যাচে ভাল ফিল্ডিং হবে আবার কোনো ম্যাচে খারাপ ফিল্ডিং হবে, এটা ক্রিকেটেরই অংশ। সবাই চেষ্টা করছে ইমপ্রুভ করার।
শেন জার্গেনসন স্কটল্যান্ডের দায়িত্ব পালন করছেন। আপনাদের স্ট্রেন্থ সম্পর্কে তার ধারণা রয়েছে। এটা সমস্যা হতে পারে কিনা? এ প্রশ্নে অলরাউন্ডারদের ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ের দ্বিতীয় স্থানে নেমে যাওয়া সাকিব বলেছেন, ‘এখন বিশ্ব ক্রিকেটে সবাই সবার সম্পর্কে জানে। যেহেতু এত খেলা হয়; সবাই টিভিতে দেখে। সবাই সবারটা বিশ্লেষণ করে, সবাই সবারটা জানে কম-বেশি। পরিকল্পনা করলেই যদি সব হতো তাহলে সবাই পরিকল্পনাই করত মাঠে না খেলে; মাঠে খেলাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’
বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণ অন্য দলগুলোর থেকে ভাল। এটা নিয়ে বাড়তি কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা? এ প্রশ্নে তিনি বলেছেন, ‘এই উইকেটে স্পিনাদের জন্য অদৌ কোনো সাহায্য আছে কিনা, এটা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। যদি উইকেটে সাহায্য পাওয়া যায়, আমার মনে হয়, আমাদের দলে যে সব স্পিনার রয়েছেন তারা সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারবেন। আমরা যে ২টি ম্যাচ খেলেছি, উইকেটে বিন্দুমাত্র কোনো সহযোগিতা ছিল না স্পিনাদের জন্য। এ কারণে ফাস্ট বোলাদেরই দায়িত্বটা বেশি।’
কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়াটা আমাদের জন্য কতটা বাস্তবসম্মত মনে করছেন? এ প্রশ্নে সাকিব বলেছেন, ‘২টি ম্যাচ জিতলে আমরা কোয়ার্টার ফাইনালে যাব। এটা হলে কোনো অংক কিংবা কোনো সমীকরণ প্রয়োজন হবে না। সহজ হিসাব, আমাদের সামনে ৩টা ম্যাচ আছে; ২টি ম্যাচ আমাদের জিততে হবে। আমরা সেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
মুশফিক-সাকিব ভাল খেলছেন; ব্যাটিং অর্ডারে আপনাদের এগিয়ে খেলানোর কোনো সম্ভাবনা আছে কিনা? এ প্রশ্নে তিনি বলেছেন, ‘এটা আসলে কোচ এবং অধিনায়কের বিষয়। দলের জন্য তারা যা ভাল মনে করবেন সেটাই করবে। আমার কাছে মনে হয় না যে আমাদের কারোরই তাতে দ্বিমত থাকবে।’
স্কটল্যান্ডের কাছে হারলেও ইংল্যান্ডকে হারালে আমরা কোয়ার্টারে চলে যাব; এটা বৃহস্পতিবারের ম্যাচে চাপমুক্ত রাখছে কিনা? এ প্রশ্নে সাকিব বলেছেন, ‘আসলে আমি এই সমীকরণটা জানি না। আমরা এভাবে চিন্তা করিনি। আমরা যদি এই ম্যাচটা জিতি, আমাদের জন্য তা ভাল হবে; জয়ের একটা মুহূর্ত সঙ্গী থাকবে। সবাই একটা ইতিবাচক মাইন্ড সেটআপ নিয়ে থাকতে পারবে। যারা ভাল করবে তাদের একটা আত্মবিশ্বাস থাকবে। এদিক থেকে এই ম্যাচটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’