নিখোঁজ মেয়রের লাশ মিলল আজিমপুর গোরস্থানে
দুই মাস ধরে নিখোঁজ রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা পৌরসভার মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল গফুরের লাশ মিলল আজিমপুর গোরস্থানে। পুলিশের হাতে আটক জান্নাতুন সালমা মিমের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পবা থানা পুলিশ মঙ্গলবার বিকেলে মেয়রের লাশ উদ্ধার করে।
পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে রাজশাহী পুলিশ সুপার আলমগীর কবির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘দুপুরে পবা থানা পুলিশের একটি দল আজিমপুর গোরস্থানে পৌঁছায়। বিকেল ৫টার দিকে নিখোঁজ মেয়র আব্দুল গফুরের লাশ উদ্ধার করা হয়। আজিমপুর গোরস্থানের রেজিস্ট্রি খাতায় মেয়র গফুরের মৃত্যু ৩ জানুয়ারি ও দাফন ৬ জানুয়ারি উল্লেখ্য করা হয়েছে।’
এসপি আলমগীর হোসেন আরও বলেন, ‘পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মিম জানান, মেয়র আব্দুল গফুরকে তিনি হত্যা করেন। তবে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেওয়ার সময় হত্যার কথা অস্বীকার করেন মীম। এ জন্য সোমবার তাকে আরও সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে লাশ উদ্ধারের জন্য মঙ্গলবার সকালে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয় পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলে আজিমপুর গোরস্থান থেকে মেয়র গফুরের লাশ উদ্ধার করা হয়।’
এর আগে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন মেয়র। ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত পরিবার ও নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে মোবাইলের মাধ্যমে মেয়রের যোগাযোগ ছিল। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ হন। ১৬ ও ১৭ জানুয়ারি মেয়রের দুটি মোবাইল ফোন নম্বর থেকে তার ছেলের মোবাইলে দুটি এসএমএস আসে। ওই দুটি এসএমএসের একটিতে ২৫ হাজার টাকা ও অন্যটিতে ৫০ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে পাঠাতে বলা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন যোগাযোগ বিছিন্ন থাকার পর এসএমএস করে বিকাশে টাকা চাওয়ার বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হলে ১৯ জানুয়ারি মেয়রের স্ত্রী ফজিলাতুন্নেসা পারুল পবা থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ তদন্তে নামে।
পবা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ চাঞ্চল্যকর এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত হন। মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে মেয়রের ফোন নম্বরের অবস্থান ৭ জানুয়ারি নওগাঁ ও তারপর থেকে ঢাকায় পাওয়া যায়। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে ২৩ জানুয়ারি ঢাকার সংসদ ভবন এলাকা থেকে মিমকে আটক করা হয়। আটকের পর মিম মেয়রের স্ত্রী বলে দাবি করেন। এরপর ৩১ জানুয়ারি মিমের দুই বোন জান্নাতুন নাইম ও জান্নাতুন ফেরদৌসকে নওগাঁ ও ঢাকা থেকে আটক করে পুলিশ। তাদের আটকের পর আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিন করে রিমান্ড চাওয়া হয়।
২৬ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষে বিচারক মিমকে চার দিন এবং জান্নাতুন নাইম ও জান্নাতুন ফেরদৌসকে একদিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন।