সহিংসতা বন্ধের আহ্বান কূটনীতিকদের
বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ কয়েকটি দেশের কূটনীতিকরা। একই সঙ্গে তারা রাজনৈতিক অস্থিরতা নিরসনে সংলাপে বসার পরামর্শ দিয়েছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দুই ঘণ্টার বৈঠক শেষে তারা এ আহ্বান জানান ও পরামর্শ দেন।
বৈঠক শেষে গুলশান কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের ঢাকাস্থ অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূত গ্রেগ উইলকক বলেন, আমরা বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, চার্জ দ্য আফেয়ার্সগণ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছি।
বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করার জন্যই আমাদের এ বৈঠক। গত রবিবার সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমরা যে বৈঠক করেছি সে ধারাবাহিকতায় এ বৈঠক।
তিনি বলেন, আমরা দুই পক্ষকে চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা, অস্থিরতা বন্ধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছি। পারস্পরিক বিশ্বাস পুনঃস্থাপন ও দ্বন্দ্ব নিরসন করে নিজেদের মধ্যে আস্থা স্থাপনের আহ্বান জানিয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা চলমান সহিংসতা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছি। চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা নিরসনে সংলাপে বসার পরামর্শ দিয়েছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, মানবাধিকার রক্ষা এবং গণতন্ত্রের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থা অর্জনের পথ বের করতে হবে। রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নিরসন করতে হবে।
তিনি এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ধন্যবাদ জানান।
এর আগে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট, অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূত গ্রেগ উইলকক, কানাডা, ডেনমার্ক, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স, জার্মানী, জাপান, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, কোরিয়া, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, তুরস্ক ও যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার ও চার্জ দ্য এফেয়ার্স।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তারা কূটনৈতিক কোরের দ-৬৫-৫১১ নম্বরের একটি সাদা রংয়ের মাইক্রোবাসে করে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। গাড়িটির সামনে-পেছনে ছিল পুলিশের নিরাপত্তা। রাত পৌনে ৯টার দিকে তারা কার্যালয় ছেড়ে যান।
বাংলাদেশের আসার পর খালেদা জিয়ার সঙ্গে এটাই যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বার্নিকাটের প্রথম সাক্ষাৎ।
গত ৩ জানুয়ারি থেকে গুলশান কার্যালয়ে রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
এরই মধ্যে ২৫ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আদালতে হাজির না হওয়ায় খালেদা জিয়ার জামিন বাতিল করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
অন্যদিকে মঙ্গলবার দুপুরে খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও আদালতে জামিন পাওয়া সাপেক্ষে কার্যালয়ে ফিরে আসার আশ্বাস পেলে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আত্মসমর্পণ করবেন।’