হরতাল বাড়ল শুক্রবার সকাল পর্যন্ত
চলমান অবরোধ কর্মসূচির পাশাপাশি বুধবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত দেশব্যাপী হরতালের সময় বাড়িয়েছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ ২০ দলের পক্ষে হরতালে বাড়ানোর ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে তিনি বৃহস্পতিবার সারাদেশে জেলা, উপজেলা, থানা, পৌরসভা ও সকল মহানগরের ওয়ার্ডে গণমিছিলের আহ্বান জানান।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘চলমান অবরোধ-হরতাল কর্মসূচির পাশাপাশি বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণভাবে গণমিছিল পালন ২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীসহ দেশবাসীকে বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে আহবান জানাচ্ছি।’
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আজ দেশের সকল গণতন্ত্রকামী দেশপ্রেমিক জনতা ঐক্যবদ্ধ। সংবিধান স্বীকৃত সকল মৌলিক ও মানবাধিকার রক্ষা, ভোটের অধিকার, প্রকৃত জনপ্রতিনিধিত্বশীল সংসদ ও সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই চলমান শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। বিনা ভোটের অবৈধ লুটেরা সরকারকে হটানো ছাড়া জনগণের সামনে কোনো বিকল্প পথ খোলা নেই।’
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘পুলিশী নির্যাতন ও নিয়ন্ত্রিত বিচার ব্যবস্থার কল্যাণে দমন-নিপীড়নই এখন পতনোন্মুখ সরকারের একমাত্র অবলম্বন। কতিপয় দলকানা গণমাধ্যমের অপপ্রচার ও ১৪ দলীয় আওয়ামী গলাবাজী শীঘ্রই শেষ বিচারে ক্ষমতায় টিকে থাকার নিস্ফল ব্যাকুলতায় পর্যবসিত হবেভ।’
বিএনপির মুখপাত্র সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, সিটি করপেরেশনে বিরোধী দল সমর্থিত নির্বাচিত মেয়রদের অপসারণের প্রক্রিয়া চলছে বলে আমরা পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানতে পেরেছি। সরকার ইতোমধ্যে বিরোধী দল সমর্থিত উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র, সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ অনেক নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদেরকে কলমের খোঁচায় অপসারণ করেছে।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, আওয়ামী গণতন্ত্রে এটি নতুন কিছু নয়, বরং এটি আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মসূচি ও বাকশালতন্ত্রের বাস্তবায়ন। তারই অংশ হিসেবে গতকাল রাজশাহীর সিটি করপেরেশন মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের বাসায় হামলা, গুলি ও ভাংচুর করে তার মা’কে আহত এবং দু’ভাইকে আটক করা হয়। এই হামলার অজুহাত সৃষ্টির লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক মেয়রের বাসায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই ককটেল হামলা পরিচালিত হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা এহেন জঘন্য হামলা ও ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। একই সঙ্গে সরকারকে হুঁশিয়ার করতে চাই, দেশে গৃহযুদ্ধ বাধানোর পাঁয়তারা বন্ধ করুন। অন্যথায় উদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য আপনারা দায়ী থাকবেন। এ সমস্ত ঘটনায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা জড়িত বলে আমরা আগেও তথ্য-উপাত্তসহ জাতির সামনে উপস্থাপন করেছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আজকেও বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, রাজশাহীর পুঠিয়ায় পেট্রোল বোমা হামলার সময় ছাত্রলীগ নেতা সিজার, সোহানুর রহমান ও জয়কে পুলিশ হাতে নাতে গ্রেফতার করেছে। সুতরাং, এসব নোংরা ষড়যন্ত্র বন্ধ করে গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসুন। গণতন্ত্রের যাত্রাকে অব্যাহত রাখার স্বার্থে গণদাবি মেনে নিয়ে দ্রুত পদত্যাগ করুন। দেশ ও জাতিকে চরম অনিশ্চয়তা থেকে রক্ষা করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা নিন। অন্যথায় দেশে উগ্রপন্থা ও অগণতান্ত্রিক পন্থার উদয় হলে জাতি আপনাদের ক্ষমা করবে না।’
বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার গণদাবি মেনে না নেয়ায় আমরা পূণরায় নির্দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু, অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে এবং দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে গুম, খুন, অপহরণ, পঙ্গু ও আহত করার প্রতিবাদে এ হরতাল আহ্বান করা হয়েছে।