যুবকের মৃতদেহ, প্রেমিকার বাড়িতে আগুন!
প্রেমিকার বাড়ির পাশের বাগানে প্রেমিকের লাশ পাওয়ার জের ধরে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী প্রেমিকার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে। পরে পুলিশ এসে ফাঁকা গুলি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
মঙ্গলবার সকালে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার হারতা ইউনিয়নের জামবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হরেন রায় জানান, ওই গ্রামের সুপেন মিস্ত্রির ছেলে ও ঢাকার তিতুমীর কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র সুখদেব মিস্ত্রির (২২) সঙ্গে একই গ্রামের দশরথ সমদ্দারের মেয়ের (১৯) প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল।
স্থানীয় কৃষক সমির বল্লভ জানান, মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে প্রেমিকার বাড়ির পশ্চিম পাশের বাগানে সুখদেবের লাশ পড়ে থাকতে দেখে তিনি সুখদেবের স্বজনদের খবর দেন। সুখদেবের লাশ পাওয়া গেছে- এ খবর মুহূর্তের মধ্যে গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। তার মৃতদেহ দেখে স্বজনেরা ও গ্রামবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। সুখদেবকে হত্যা করা হয়েছে- অভিযোগে তারা দশরথের বাড়িতে হামলা চালায়। তারা ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করে বসতঘরসহ চারটি ঘর, একটি মন্দির ও খড়ের দুটি গাদায় অগ্নিসংযোগ করে। হামলায় দশরথ সমদ্দার (৭৫), তার স্ত্রী (৬০) ও ছেলেমেয়েসহ ১০ জন আহত হন।
গ্রামের লোকজন জানান, সুখদেবের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি মেয়েটির পরিবার। অনেক আগে থেকেই সুখদেবকে তারা হুমকি দিয়ে আসছিল। সুখদেবের পরিবারে দাবি, প্রেম করার অপরাধে সুখদেবকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এদিকে দশরথ সমাদ্দার বলেন, এই মৃত্যুর সঙ্গে আমরা জড়িত না। আমাকে নিঃস্ব করার জন্য ষড়যন্ত্র করে আমাদের ফাঁসানো হয়েছে।
নিহতের বাবা সুপেন মিস্ত্রি বলেন, আমার ছেলেকে মেয়ের পরিবার পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
উজিরপুর মডেল থানার ওসি মো. নুরুল ইসলাম (পিপিএম) ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, খবর পেয়ে হারতা পুলিশ ক্যাম্প ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করা হয়। পরে আহতদের উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা এবং ঘরে অগ্নিসংযোগের পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। হত্যা মামলায় প্রেমিকাসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বরিশালের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন, সহকারী পুুলিশ সুপার সুদীপ্ত সরকার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহরাব হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।