প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগের আহ্বান ২০ দলের
প্রধানমন্ত্রীকে গণদাবি মেনে দ্রুত পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট।
বৃহস্পতিবার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে জোটের পক্ষে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ এ আহ্বান জানান।
তিনি প্রধানমন্ত্রীকে হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘এখনো সময় আছে, ফ্যাসিবাদী একদলীয় রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েমের উন্মাদনা ও ব্যর্থ প্রচেষ্টা থেকে সরে এসে গণদাবি মেনে নিয়ে দ্রুত পদত্যাগ করুন। দেশে প্রকৃত গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করুন। অন্যথায়, ইতিহাসের ঘৃণ্য স্বৈরশাসকদের মতোই নির্মম পরিণতির ভাগ্য বরণ করতে হবে।’
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘স্থিতিশীলতা, শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জাতীয় আকাঙ্ক্ষা পূরণের লক্ষ্যেই চলমান গণআন্দোলন যৌক্তিক পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তৃণমূলের অংশগ্রহণে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে স্তব্ধ করার উদ্ভট পরিকল্পনা শাসকশ্রেণীর চিন্তার দৈন্যতা ছাড়া আর কিছুই নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশ ও জাতির কল্যাণে গণমানুষের মুক্তির লক্ষ্যে যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত রয়েছেন। গ্রেফতারি পরোয়ানা গণআন্দোলনকে বন্দী করতে পারে না বরং অবৈধ সরকারের দেউলিয়াত্বই প্রমাণ করে।’
বিবৃতিতে সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দেশের সকল বিরোধী দলের নেতাকর্মী ও গণতন্ত্রপ্রিয় সাধারণ মানুষ শাসকগোষ্ঠীর অন্ধ প্রতিহিংসা, বিদ্বেষমূলক রাজনীতি ও উগ্র ক্ষমতালিপ্সার শিকারে পরিণত হয়েছেন। দমন-নিপীড়নে জর্জরিত হচ্ছে গণমাধ্যম কর্মী, সাংবাদিক, সম্পাদক ও মালিকগণ। বিনা অজুহাতে একের পর এক সংবাদ মাধ্যম বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। সর্বশেষ অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাস্ট নিউজ বিডি ডটকম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কারণ, তার মালিক ও সম্পাদক মুশফিকুল ফজল আনসারী জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রেস ব্রিফিংয়ে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে প্রশ্ন করেছেন।’
তিনি বলেন, অবশ্য যে দেশে জমিনে দাঁড়ানোর সাহস না পেয়ে গাছের উপরে উঠে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর কারণে জালাল উদ্দিনকে ‘গ্রেফতার’ হতে হয়, সেখানে মুশফিকের আচরণ চরম ধৃষ্টতা হিসেবেই গণ্য হবে এটাই স্বাভাবিক। জনগণের ভয়ে সরকার কী পরিমাণ ভীতসন্ত্রস্ত এটা তারই একটি মাপকাঠি বলেও মন্তব্য তার।
বিবৃতি বলা হয়, ‘সাংবাদিক নির্যাতন, ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও নিয়ন্ত্রণের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভখ্যাত গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করে অবৈধ সরকার নিজের অসহায়ত্বই প্রমাণ করছে। গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকার নিষ্ফল প্রয়াস ব্যর্থ হতে বাধ্য। অতীতে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ এবং সাংবাদিক নির্যাতন কোনো সরকারকেই পতনের হাত থেকে রক্ষা করতে পারেনি, এই সরকারকেও পারবে না।’
সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা সরকারের এ সকল ঘৃণ্য তৎপরতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে, অবিলম্বে বন্ধ করে দেওয়া গণমাধ্যম খুলে দেওয়া ও ‘গ্রেফতার’ সকল সম্পাদক, মালিক ও সাংবাদিকদের মুক্তি দাবি করছি।
তিনি আরও বলেন, ‘ফেনীর ফতেহপুরে জেলা ছাত্রদল নেতা আরিফুর রহমানকে গ্রেফতার করতে গিয়ে তাকে না পেয়ে তার বৃদ্ধ পিতা মফিজুর রহমানকে যৌথবাহিনী নিজ বাড়িতেই নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। এ ধরনের বর্বর হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই।’
প্রধানমন্ত্রীর হুকুমেই এ সব হত্যাকাণ্ড হচ্ছে দাবি করে সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সময়ের পট পরিবর্তন হলে উপযুক্ত আদালতে এ সব হত্যাকাণ্ডের বিচার করা হবে।