এবার ‘সাইকেলবোমা’
গানপাউডার, ককটেল, পেট্রোলবোমার পর এবার ‘সাইকেলবোমা’সহ তিনজনকে আটক করেছে র্যাব-২।
র্যাব জানায়, ‘সাইকেলবোমা’ দিয়ে বড় ধরনের নাশকতা চালিয়ে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার ক্ষতিসাধন করাই আটকদের মূল উদ্দেশ্য ছিল।
শেরেবাংলা নগরের র্যাব-২ এর কার্যালয়ে রবিবার বিকেল ৪টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল এ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান এ তথ্য জানান।
আটকরা হলেন— রাকীবুল ইসলাম মণ্ডল ওরফে রাকীব ওরফে শশী (২৫), আমিনুল ইসলাম রানা (৩০) ও রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ (২২)।
কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, তাদের নাশকতা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক (সাবেক কমিটি) আনিসুর রহমান খোকনের নির্দেশে ও আর্থিক সহায়তায় রানা খুলনা থেকে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরকদ্রব্য সংগ্রহ করে। একটি বাইসাইকেল খুলে সেটার ভেতর খুব কৌশলে বিস্ফোরকগুলো লুকিয়ে পুনরায় বাইসাইকেলটি লাগিয়ে সরবরাহ করে। বাইসাইকেলের পাইপের ভেতরে বিস্ফোরকদ্রব্য এমনভাবে সেট করা ছিল যাতে এর ফিউজে আগুন দেওয়ার অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ঘটত। রানা অভিনব পন্থায় বাইসাইকেলের পাইপের ভেতরে করে বিস্ফোরকদ্রব্য কুরিয়ার সার্ভিসযোগে রাকীবের ঠিকানায় ঢাকায় পাঠায়।
কমান্ডার মুফতি মাহমুদ বলেন, রাত পৌনে ২টার দিকে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে রাজধানীর কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিস্ফোরকভর্তি বাইসাইকেল, ৫৮টি ককটেল, একটি পাইপবোমা, ৪৮টি পেট্রোলবোমা, ৫০০ গ্রাম সালফার পাউডার ও নাশকতার কাজে ব্যবহৃত অন্য সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়।
আটকদের জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, আনিসুর রহমান খোকনের নির্দেশে আটকরা গুলশান, বাড্ডা, মতিঝিল, কাওরান বাজার ও ধানমন্ডি এলাকায় বিভিন্ন সময় ককটেল বিস্ফোরণ, অগ্নিসংযোগ, গাড়ি ভাঙচুরের মাধ্যমে নাশকতা চালিয়ে আসছে। নাশকতার কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে খোকন তার আস্থাভাজন ছাত্রদল নেতা মো. আমিনুল ইসলাম রানা ও রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজকে জনবল সরবরাহের নির্দেশ দেন।
তিনি আরও বলেন, রানা ও রিয়াজ টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন সময়ে তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের খোকনের কাছে পাঠাতেন। খোকন তার নিজ গাড়িতে হাতবোমা ও বিস্ফোরক বহন করে ভাড়া করা ছাত্রদল ক্যাডারদের কাছে সরবরাহ করতেন এবং নির্দেশিত স্থানগুলোতে নাশকতা চালাতেন।
মুফতি মাহমুদ খান বলেন, এভাবে গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলের পার্শ্ববর্তী রাস্তায় চারটি, গুলশান-১ নম্বর মোড় এলাকায় তিনটি, ধানমন্ডি মেট্রো শপিংমলের নিকটবর্তী ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের পার্শ্বে পাঁচটি, কাওরান বাজারের হোটেল সোনারগাঁওয়ের বিপরীতে সাউথইস্ট ব্যাংকের পাশে ৬টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয় এবং গুলশান-১ নম্বর এলাকায় অভিনব পন্থায় (গাড়িতে রেখে আসা টুকরা কাগজের মাধ্যমে) গাড়িতে আগুন দেওয়ার চেষ্টা চালানো হয়।